You dont have javascript enabled! Please enable it!

২৪ ফেব্রুয়ারী ১৯৫২ঃ এক নজরে এদিন

ক্ষমতাসীন মুসলিম লীগে ব্যাপক ক্ষোভের কারনে ব্যাবস্থাপক পরিষদের অধিবেশন আকস্মিক ভাবে স্থগিত হয়ে যায়। আগামীকাল থেকে বাজেট অধিবেশন চলার কথা ছিল।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় একজিকিউটিভ কাউন্সিলের (বর্তমানে সিন্ডিকেট) বৈঠকে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবী জানানো হয়। সভায় ২১ তারিখের গুলিবর্ষণের নিন্দা করে নিহত ছাত্রদের প্রতি শোক ও সহানুভুতি প্রকাশ করা হয়। সভায় প্রভোস্ট, ডীন ছাড়াও বহু সংখ্যক অবাঙ্গালী শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন। নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর জন্য ২৫ ফেব্রুয়ারী বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়। কলা বিভাগের ডীন অধ্যাপক জুবেরীর সভাপতিত্তে শিক্ষকদের এক সভায় বাংলাকে অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবী জানানো হয়। শিক্ষক গন ঘটনা তদন্তে বিচারপতির নেতৃত্ব এ কমিশন গঠনের দাবী জানান। তারা ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার এবং সেনা ও পুলিশ প্রত্যাহারের দাবী জানান।
রাষ্ট্রভাষা কেন্দ্রীয় সংগ্রাম পরিষদ আজ হরতাল পালনের জন্য জনগনের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
আজ ইসলামপুর ও ঢাকা রেল স্টেশনের কাছে দুটি বিক্ষোভকারী দলের উপর লাঠিচার্জ হয়েছে। সলিমুল্লাহ হলে ছাত্রদের সমাবেশ হয়। সমাবেশে ছাত্ররা মাইক ব্যাবহার করে।
আজ সান্ধ্য আইন শিথিল করে ১০টা – ৫টা করা হয়েছে।
আজ কুকুর, গরু, ছাগলের গায়ে সরকার বিরোধী স্লোগান লিখে তাদের রাস্তায় ছেড়ে দেয়া হয়।
ঢাকা বেতারে হরতাল পালনের কারনে শুধু খবর প্রচার করা হয়।
শহীদদের স্মৃতি রক্ষার জন্য এক রাতে ৬ ফুট চওরা ১০ ফুট উচু একটি স্মৃতিস্থম্ভ নির্মাণ করা হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী নুরুল আমিন আজ বেতার ভাষণ দেন।
সিভিল লিবার্টি কমিটির আহবায়ক কমরুদ্দিন আহ্মেদ এক বিবৃতিতে বলেন ২১ ও ২২ তারিখের ঘটনার জন্য যারা দায়ী তারা এখন বাঙ্গালী ও অবাঙ্গালীদের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টির প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।
রাজশাহী নওগার এমএলএ মনির উদ্দিন আখন্দ বিবৃতিতে বলেছেন দলের সভায় নুরুল আমীনের প্রতি আস্থা জানিয়ে যে প্রস্তাব গ্রহন করা হয়েছে তাতে তিনি একমত পোষণ করেন না। ২১ তারিখের ঘটনার পর তার পক্ষ থেকে নুরুল আমীনের প্রতি তার আস্থা নেই। গাইবান্ধার এমএলএ আহমদ হোসেন মুসলিম লীগ ওয়ার্কিং কমিটি ও প্রাদেশিক পার্লামেন্টারি পার্টির সকল পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন।
সাবেক মুসলিম ছাত্রলীগ সভাপতি শাহ আজিজুর রহমান ২১ ও ২২ তারিখের ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান।
হোসেন শহীদ সোহরাওয়ারদি ২১-২২ তারিখের ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি বলেন আমি পরস্পর বিরোধী বক্তব্য শুনিয়াছি। তিনি বলেন আমি উর্দুকেই রাষ্ট্রভাষা করার পক্ষপাতি তবে তা বাঙ্গালীদের উপর জোর করে চাপিয়ে দেয়ার পক্ষপাতী নই। তিনি বলেন বাংলা পাকিস্তানের সংখ্যাগুরুর মাতৃভাষা। তিনি বলেন পূর্ববঙ্গে বিদ্যালয়ে উর্দু পড়ানো শুরু হলে প্রদেশবাসী এ ভাষা আয়ত্ত করবে। পরবর্তীতে তারা নিজেরাই সে ভাষায় পড়তে এবং লিখতে শুরু করবে। তখন উর্দু একটি গৌরব জনক ভাষা হবে। প্রদেশবাসী তখন দুই ভাষাভাষী হবে। অপর দিকে সম্প্রীতি বাড়ানোর জন্য পশ্চিম পাকিস্তানেও বাংলা ভাষা শিক্ষা দেয়া উচিত।

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!