২৪ ফেব্রুয়ারী ১৯৭২ঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমান
প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমান সচিবালয়ে বিবদমান দু গ্রুপের বিরোধ মেটাতে গিয়ে তাদের উদ্দেশে বলেন আইন নিজের হাতে নেওয়ার সাথে যুক্ত লোকদের কঠিন শাস্তির আওতায় আনা হবে এবং সে যাই হোক তাকে রেহাই দেয়া হবে না। সচিবালয়ে এক কর্মচারীর সাথে এক ক্যান্টিন কর্মচারীর মারামারির জের ধরে প্রধানমন্ত্রী দুপুরে লাঞ্চ করার যাওয়ার পথে তাদের মুখোমুখি হয়ে ঘটনা জানলে তাদের উদ্দেশে একথা বলেন। এ সময় অর্থমন্ত্রী তাজউদ্দিন, আইন মন্ত্রী কামাল হোসেন প্রধানমন্ত্রীর সাথে ছিলেন।
রেডিও মস্কো এবং তাস এর সাথে সাক্ষাৎ কারে প্রধানমন্ত্রী বলেন সকল শান্তিকামী দেশের সাথে বাংলাদেশ সহযোগিতা করতে রাজী আছে। বাংলাদেশ পৃথিবীর সকল বঞ্চিত মানুষের পক্ষে কথা বলে যাবে। পর রাষ্ট্রনীতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন বাংলাদেশ জোট নিরপেক্ষ নীতি অবলম্বন করে যাবে। তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে সোভিয়েত জনগন এবং সোভিয়েত সরকারের ভুমিকার ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন তাদের কাছে বাংলাদেশ কৃতজ্ঞ। তিনি বলেন তারা জাতিসংঘের ভিতরে এবং বাইরে বাংলাদেশের জন্য লড়াই করে সাম্রাজ্যবাদী চক্রান্ত ব্যার্থ করে দিয়েছে। তিনি এ বছর বহজাতিক সোভিয়েত ইউনিয়নের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে সোভিয়েত সরকার ও জনগনের প্রতি শুভেচ্ছা জানান।
বিশ্ব বিখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক সত্যজিৎ রায় সহ একদল ভারতীয় বাঙ্গালী শিল্পী প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমানের বাসায় তার সাথে সাক্ষাৎ করেন। এ সময় শিল্পীরা সেখানে গান পরিবেশন করেন। দলে ছিলেন ধীরেন মুখার্জি, সুমিত্রা মুখার্জি, শ্যামল মিত্র
প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানে আটকে পড়া বাঙ্গালীদের নিরাপত্তা বিধান ও উদ্ধারে বিশ্বব্যাপী তৎপরতা চালানোর জন্য পররাষ্ট্র দপ্তরকে নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন বিশ্ব এগিয়ে না আসলে এ চার লাখ বাঙ্গালীকে বাঁচানো সম্ভব নয়। একই সাথে প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘের মাধ্যমে বাংলাদেশের অবাঙ্গালীদের সাথে পাকিস্তানে আটক বাঙ্গালীদের বিনিময় প্রস্তাবও দিয়েছেন। তিনি বলেন নানা সুত্র থেকে খবর পাওয়া গেছে সেখানে ব্যাপক হারে বাঙ্গালী নির্যাতন হচ্ছে।
এদিন পাকিস্তানে আটক বাঙ্গালীদের পরিবারের একটি দল সাক্ষাৎ করলে তিনি তাদের জানান তাদের ফেরত আনার ব্যাপারে তিনি সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
কচিকাঁচার একটি প্রতিনিধিদল প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে দেখা করেন। এ দলে ছিলেন আজকের ছড়াকার লুতফর রহমান রিটন। সোভিয়েত ইউনিয়ন সফরে প্রধানমন্ত্রী এ ছবি গুলি নিয়ে যাবেন এবং সোভিয়েত শিশুদের প্রদর্শন করার জন্য সে দেশের সরকারকে উপহার দিবেন।