১৭ ফেব্রুয়ারী ১৯৭২ঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমানের কার্যক্রম
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমান বুলগেরিয়ান রেডিও ও টেলিভিশন এর এক সাংবাদিকের কাছে সাক্ষাতকারে বলেছেন জাতীয় উন্নয়নের প্রধান শর্ত হল জনগনের ঐক্য। তিনি বলেন আমি মনে করি এ ঐক্য হবে সমাজতন্ত্র গনতন্ত্র এবং ধর্ম নিরপেক্ষতায়। তিনি বলেন বাংলাদেশ দক্ষিন পূর্ব এশিয়া, আফ্রিকা, ল্যাটিন আমেরিকার সকল দেশের সাথে ভাল সম্পর্ক গড়ে তুলবে। তিনি সোভিয়েত সরকারের প্রশংসা করে বলেন তারা সমাজতান্ত্রিক দেশ তাদের দেশের জনগন বাংলাদেশের অকৃত্তিম বন্ধু। বুলগেরিয়াও সোভিয়েত ইউনিয়নের মত বাংলাদেশের শুভাকাঙ্ক্ষী দেশ। আমরা তাদের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক অব্যাহত রাখতে চাই। সাম্প্রতিক ভারত সফর সম্পর্কে তিনি বলেন ভারতের নীতির সাথে বাংলাদেশের নীতির মিল আছে। আমরা দু দেশ পৃথিবীর বঞ্চিত মানুষের বিষয়ে অভিন্ন সিদ্ধান্ত নিব। তিনি ৯ মাসে পাক বর্বরতার কাহিনী তুলে ধরেন। তিনি বলেন বাংলাদেশের পুনর্গঠন ও পুনর্বাসনে সোভিয়েত স্বীকৃতি খুব কাজে লাগবে। তিনি বলেন আমি শীঘ্রই সোভিয়েত ইউনিয়ন সফর করব। এ সফর বাংলাদেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ সফরেই তাদের সহযোগিতার বিষয় সমুহ চূড়ান্ত হবে।
প্রধানমন্ত্রীর সরকারী বাসভবনে শেখ মুজিবুর রহমানের সভাপতিত্তে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সভা বিকেল ৩টা থেকে সাড়ে ৭টা পর্যন্ত সাড়ে চার ঘণ্টা যাবত চলে। বৈঠকে দেশের সকল শহীদানের প্রতি শ্রদ্ধা শোক প্রকাশ ও দোয়া চাওয়া হয়। এছাড়াও দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করা হয়। বৈঠক পরদিন বিকেল পর্যন্ত মুলতবি রাখা হয়।
বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট খলিলুর রহমান প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে দেখা করে তার কাছে তার একটি ফটো এ্যালবাম বুঝিয়ে দেন। ২৫ মার্চ বা পরবর্তী কোন সময়ে তার বাসভবন থেকে এ্যালবামটি পাক বাহিনী নিয়ে গিয়েছিল। খলিলুর রহমান বিমানবন্দরের কাছে এলবামটি খুজে পান।