You dont have javascript enabled! Please enable it!

২৩ ফেব্রুয়ারী ১৯৭২ঃ খুলনায় শেখ মুজিব

খুলনার পাইক গাছায় প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমান নিক্সনের চীন সফরের উপর মন্তব্য করতে গিয়ে বলেন এশিয়ার ভাগ্য এশিয়ার জনগনই নির্ধারণ করবে। তিনি চিনে বসে এশিয়ার সমস্যা সমাধান করার চেষ্টা না করার জন্য দু দেশের সরকার প্রধানের কাছে আহবান জানান। জনসভায় তিনি জানান এ পর্যন্ত ৪০টি দেশ বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিয়েছে। স্বাধীনতা সংগ্রামে সমর্থন দেয়ার জন্য তিনি কয়েকটি দেশের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি জনগণকে জাতীয় পুনর্গঠনে এগিয়ে আসার আহবান জানান। তিনি বিকেলে হেলিকপ্টার যোগে এখানে আসেন। তিনি সেখানে একটি বাধ নির্মাণ প্রকল্প উদ্বোধন করেন। পরে সেখানেই জনসভায় ভাষণ দেন।
ঢাকায় প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমান সোভিয়েত সংবাদ সংস্থা তাস এবং সোভিয়েত রেডিওকে সাক্ষাৎকার দেন। তিনি আসন্ন সোভিয়েত ইউনিয়ন সফর সম্পর্কে তাদের কিছু প্রশ্নের উত্তর দেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমান খুলনার জনসভা শেষ করে টুঙ্গিপাড়া নিজ গ্রামের বাড়ীতে গমন করেন। ঢাকা থেকে আরেক হেলিকপ্টারে একই সময়ে তার দুই পুত্র ও দুই কন্যা এবং স্ত্রী টুঙ্গি পাড়া পৌঁছেন। প্রধানমন্ত্রীর এটি ২৫ মার্চ পরবর্তী প্রথম গ্রামের বাড়ী সফর। শেখ জামাল এ সফরে যাননি। এ ছাড়াও মন্ত্রী খন্দকার মস্তাক এবং শেখ আজিজ শেখ মুজিবের সাথে ছিলেন। বিগত ১৯ মে বাড়ীটি পাক হানাদার বাহিনী পুড়িয়ে দেয়ার পর একটি টিনের ঘর পুনঃ নির্মাণ করে প্রধানমন্ত্রীর পিতা মাতা সে বাড়ীতে বসবাস করতে থাকেন। সফরকালে বাড়ীতে তার এক ভগ্নিপতি ভাই নাসের এবং পিতা মাতা উপস্থিত ছিলেন।

বীরাঙ্গনা পুনর্বাসন

সরকার বীরাঙ্গনা পুনর্বাসনে ১০ কোটি টাকা মঞ্জুর করেছে। এ লক্ষে প্রধান মন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমান একটি স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন। এ লক্ষে তিনি ১৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি বোর্ড গঠন করেছেন। বোর্ডে বিচারপতি কেএম সোবহান চেয়ারম্যান, আব্দুল আওয়াল নির্বাহী পরিচালক হয়েছেন। অপর সদস্যরা হলেন বদরুন্নেসা আহমেদ, নুরজাহান মুর্শিদ, সাজেদা চৌধুরী, মমতাজ বেগম, রাফিয়া আখতার, নীলিমা ইব্রাহীম, সুফিয়া কামাল, জাহানারা রাব্বি, মিসেস মুনির চৌধুরী, মিসেস জ্যোতির্ময় গুহ ঠাকুরতা, মোসফেকা মাহমুদ, । বোর্ড তাদের চিকিৎসা, ঔষধ, পেশাগত শিক্ষা, কর্মসংস্থান ও পুনর্বাসনের বেবস্থা করবেন। এ ছাড়া নিহত বুদ্ধিজীবীদের মা, বোন, স্ত্রীদের একই রুপ সাহায্য ও সুবিধাও দিবে। এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে বিদেশী কয়েকটি সংস্থা অর্থ সাহায্য দেয়ার জন্য প্রস্তুত আছে তাদের একটি হল ইন্টারন্যাশনাল প্যারেন্টহুড ফেডারেশন। তারা তাদের অর্থ ইতিমধ্যেই ছাড় করেছে। এ ছাড়াও সুইডেনের একটি সংস্থা এবং কতিপয় দেশের কাছেও সাহায্য চাওয়া হয়েছে। এ কর্মসূচীতে আছে ৫০ টি সেবা সদন স্থাপন বৃত্তিমূলক শিক্ষা কেন্দ্র স্থাপন। বেক্তি পর্যায়ে কিছু বিদেশী বাংলাদেশে কাজ করার জন্যও এসেছেন। তারা কাজ করার জন্য সংশ্লিষ্ট সংস্থার সাথে যোগাযোগও করেছেন।

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!