শৈলেন্দ্র কুমার সেন
শৈলেন্দ্র কুমার সেন সবার কাছে ‘এস. কে. সেন নামে পরিচিত ছিলেন। তিনি ঢাকা। জেলা আদালতের পেছনে কোতােয়ালি রােডে বাস করতেন। শৈলেন্দ্র কুমার সেন ১৯১৩ অথবা ১৯১৪ সালে বি, এসসি, পাস করেন। এরপর কলকাতা মেডিকেল কলেজ থেকে তিনি এম. বি. পাস করেন। শিক্ষাজীবন। শেষে ঢাকায় ফিরে তিনি ডাক্তারি পেশার চর্চা শুরু করেন। শৈলেন্দ্র কুমার ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজের সার্জন হিসাবে কাজ করতেন। পাশাপাশি বিভিন্ন সমাজসেবামূলক কাজও শৈলেন্দ্র করেছেন। তার প্রচেষ্টায় নারিন্দায় দুটি মাতৃসদন ও শিশু মঙ্গলালয় গড়ে ওঠে। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি এ দুটি প্রতিষ্ঠানের সেক্রেটারি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি একাধিকবার ঢাকা পৌরসভা এবং জেলা রেডক্রসের সদস্য নির্বাচিত হন। তাঁর প্রতিষ্ঠিত ‘হিন্দু সক্কার সমিতি’ এখনও কাজ করে চলছে।
শৈলেন্দ্র কুমার সেন এক সময় রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। তিনি ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্টের প্রার্থী হিসাবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিজয়ী হন। ১৯৫৭ সালে পাকিস্তান সংসদীয় দলের সদস্য হিসাবে তিনি জাতিসংঘে গিয়েছিলেন। ১৯৫৮ সালে সামরিক আইন জারি হলে শৈলেন্দ্র কুমার সেন রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়ান। ১৯৬৫ সালে পাক-ভারত যুদ্ধের সময় তাকে গ্রেফতার করে কারাগারে আটক করা হয়। ১৯৭১ সালের ২৮ মার্চ বিকালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী তাকে কোতােয়ালি রােডের বাসা থেকে ধরে নিয়ে যায়। প্রথমে তাকে তৎকালীন জগন্নাথ কলেজের একটি কক্ষে আটকে অমানুষিক নির্যাতন করা হয়। ওই রাতেই শাঁখারীবাজারের একটি বাড়িতে আরও অনেকের সাথে ডা. শৈলেন্দ্র কুমার সেনকেও ব্রাশফায়ার করে হত্যা করা হয়।
সূত্র : শহীদ বুদ্ধিজীবী কোষ – আলী মাে. আবু নাঈম, ফাহিমা কানিজ লাভা