You dont have javascript enabled! Please enable it! শেখ মাে. শামসুজ্জোহা - সংগ্রামের নোটবুক
শেখ মাে. শামসুজ্জোহা
শেখ মাে. শামসুজ্জোহার জন্ম ১৯৪৪ সালে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার ভবানীপুর গ্রামে। তার বাবার নাম মাে, ওমর আলী। দেশভাগের পর তাদের পরিবার পূর্ব পাকিস্তানের ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ থানায় চলে আসে। তিনি শহীদ শেখ মু. রুস্তম আলীর ছােট ভাই।  শেখ মাে. শামসুজ্জোহা যশােরের সম্মিলনী ইনস্টিটিউট থেকে ম্যাট্রিক এবং মাইকেল মধুসূদন কলেজ থেকে আই. এসসি. পাস করেন। ১৯৬৭ সালে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে বি, এসসি, পাস করে শিক্ষকতাকে পেশা হিসাবে নেন। অসংখ্য গরিব ছেলেমেয়েকে তিনি বিনা পয়সায় পড়াতেন, অনেককে বইখাতা কিনে দিয়ে সাহায্য করেছেন। ১৯৭১ সালে শেখ মাে. শামসুজ্জোহা ছিলেন কোট চাঁদপুর বালিকা বিদ্যালয়ের বিজ্ঞানের শিক্ষক। এছাড়া স্থানীয় আরও দুটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তিনি খণ্ডকালীন চাকরি করতেন।  ১৯৭১ সালের ২০ এপ্রিল, আনুমানিক বেলা ৩টার দিকে পাকবাহিনী শেখ মাে. শামসুজ্জোহা, তার বড় ভাই শেখ মু, রুস্তম আলী ও তার সম্বন্ধী নূর ইসলামকে নলডাঙ্গা ভূষণ হাই স্কুল মাঠে দাঁড় করিয়ে গুলি করে হত্যা করে। গুলি লেগে পড়ে যাওয়ার পরও শামসুজ্জোহা উঠে বসার চেষ্টা করেন। তখন পাক হানাদাররা রাইফেলের বাট দিয়ে তার মাথায় আঘাত করে।
শামসুজ্জোহার মাথা চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে যায়।  কালীগঞ্জ থেকে পাকবাহিনী চলে যাওয়ার পর ২৪ এপ্রিল তাঁদের পরিবারের সদস্যরা কালীগঞ্জ গিয়ে তাদের লাশ শনাক্ত করে। শিয়াল-কুকুরে খাওয়া বিকৃত, ছিন্নভিন্ন লাশগুলাে বস্তায় ভরে গরুর গাড়িতে করে গান্না গ্রামে নেওয়া হয় এবং সেখানেই সমাহিত করা হয়।  মুক্তিযুদ্ধ শুরুর দুই মাস আগে ১৭ জানুয়ারি তাঁর বিয়ে হয়। তাঁর স্ত্রী সখিনা বেগম ছিলেন গান্না জমিদার বাড়ির ছােট মেয়ে। স্বাধীনতার পর তাদের একমাত্র মেয়ের জন্ম হয়। ২৬ বছর বয়সে শহীদ হন শামসুজ্জোহা।

সূত্র : শহীদ বুদ্ধিজীবী কোষ –  আলী মাে. আবু নাঈম, ফাহিমা কানিজ লাভা