শেখ মাে. তাহাজ্জেদ হােসেন
শেখ মাে. তাহাজ্জেদ হােসেন গােপালগঞ্জের পাইককান্দী গ্রামে জন্ম নেন। তিনি পাইককান্দী মিডল ইংলিশ স্কুলে শিক্ষকতা করতেন। জানা যায়, বি. এ. ক্লাসে পড়ার সময় ফুটবল খেলতে গিয়ে তাহাজ্জেদ গুরুতর আঘাত পান। এতে তার একটা পা চিরদিনের মতাে নষ্ট হয়ে যায়। এ কারণে তিনি আর পড়াশােনা করতে পারেননি। পরে ১৯৩০ দশকের প্রথম দিকে তাহাজ্জেদ হােসেন গ্রামের ইংলিশ মিডল স্কুলের প্রধান শিক্ষক হিসাবে যােগ দেন। তিনি ন্যায়পরায়ণ ও আদর্শ শিক্ষক ছিলেন। ছাত্রদের বােঝানাের অপূর্ব ক্ষমতার অধিকারী ছিলেন তাহাজ্জেদ। খেলাধুলায়, বিশেষত ফুটবল খেলায় তিনি বিশেষ উৎসাহ ও পৃষ্ঠপােষকতা দিয়েছেন। নিজে খেলতে পারতেন না, কিন্তু মাঠে রেফারি হিসাবে উপস্থিত থাকতেন। মুক্তিযুদ্ধের শুরুতে পাইককান্দী মিডল ইংলিশ স্কুলটি হয়ে ওঠে মুক্তিযােদ্ধাদের ক্যাম্প।
এই ক্যাম্প ধ্বংস করার জন্য পাকবাহিনী কয়েক দফা হামলা চালায়। এসব হামলায় কমপক্ষে ৫৫ জন শহীদ হন। পাইককান্দীর পাশের একটি হিন্দু অধ্যুষিত গ্রামে একই দিনে কমপক্ষে ৫০০ মানুষ পাকবাহিনীর গণহত্যার শিকার হয়। পাকবাহিনীর চতুর্থ দফা হামলায় শহীদ হন শেখ মাে. তাহাজ্জেদ হােসেন। জানা যায়, ভােরবেলা পাকবাহিনী গ্রামটিকে তিন দিক থেকে ঘিরে ফেলে। হামলার মুখে তাহাজ্জেদ হােসেন ও স্থানীয় নওশের আলী চৌধুরী বাড়ি থেকে পালাতে পারেননি। পাকবাহিনী তাহাজ্জেদ হােসেনের ঘরে আগুন দিয়ে তাঁকে জীবিত পুড়িয়ে হত্যা করে। আর নওশের আলীকে তার বাড়ির বারান্দায় গুলি করে হত্যা করা হয়। এদিন পাকবাহিনীর হাতে ১০-১২ জন নিহত হন।
সূত্র : শহীদ বুদ্ধিজীবী কোষ – আলী মাে. আবু নাঈম, ফাহিমা কানিজ লাভা