শশাঙ্ক পাল
শশাঙ্ক পালের জন্ম ও পারিবারিক পরিচয় সম্পর্কিত কোনাে তথ্য পাওয়া যায়নি। শুধু জানা যায়, তার বাবা স্বদেশ পাল কংগ্রেস রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলেন। শশাঙ্ক পাল ছিলেন একজন তরুণ কবি, সাংবাদিক ও সম্পাদক। তিনি বামপন্থি রাজনীতির সাথে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত ছিলেন। শ্রমিক আন্দোলনের সাথে ছিল তার প্রত্যক্ষ যােগাযােগ। নিজে শ্রাবস্তী নামের একটি সাহিত্য পত্রিকা সম্পাদনা করতেন। কবিতার পাশাপাশি তিনি বহু প্রবন্ধ, নিবন্ধ ও গল্প লিখেছেন। তার কবিবন্ধুদের মধ্যে ছিলেন নির্মলেন্দু গুণ, আবুল হাসান। তিনি কপােত’, ‘উদ্ধা। ইত্যাদি পত্রিকার সাথেও যুক্ত ছিলেন। ১৯৬৮ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত আফ্রো-এশীয়। সাহিত্য সম্মেলনে শশাঙ্ক সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন।
শশাঙ্ক তাঁর এক কবিতায় লিখেছিলেন :
আমি জেগে আছি।
নিশীথের অন্ধকারে
বন্য গেরিলার পাশে ….
লিখেছি আমার বুকে
আমার নতুন গান; রবসন।
লা-পাের্তে নরম্যান, মিসেস সেলেন, মােরিসন।
নামের অগ্নিদগ্ধ প্রাণের
সজীব লাল ফুলগুলােকে।
এ কবিতা থেকে বােঝা যায়, শশাঙ্ক বামপন্থি রাজনীতির আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপট সম্পর্কে কী পরিমাণ সচেতন ছিলেন। জানা গেছে, মুক্তিযুদ্ধের সময় শশাঙ্ক বরিশালের গৌরনদী এলাকায় যুদ্ধ। করেছেন। তার সহযােদ্ধারা ছিলেন কবীর চৌধুরী, হুমায়ুন ইসলাম, নির্মল কর্মকার, দেবু কর্মকার প্রমুখ। তাদের কমান্ডার ছিলেন বেণীলাল দাসগুপ্ত। তারা ১৯৭১ সালের এপ্রিলের শেষ দিকে বরিশালের বানারীপাড়ায় মিলিটারি গানবােট উড়িয়ে দিয়েছিলেন। এছাড়া পাকসেনাদের ক্যাম্পে চোরাগােপ্তা হামলা করে অস্ত্র সংগ্রহ করেছেন। শশাঙ্ক পালের শহীদ হওয়া সম্পর্কে আর কোনাে তথ্য পাওয়া যায়নি।
সূত্র : শহীদ বুদ্ধিজীবী কোষ – আলী মাে. আবু নাঈম, ফাহিমা কানিজ লাভা