মােহাম্মদ শহীদুল্লাহ
মােহাম্মদ শহীদুল্লাহর জন্ম ১৯৩০ সালের ১ জানুয়ারি, নরসিংদী জেলার বদরপুরে। তার বাবার নাম মুন্সী আবদুল হামিদ। মােহাম্মদ শহীদুল্লাহ ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে সক্রিয় অংশ নিয়েছিলেন। তিনি ১৯৩৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে এম. এ. পাস করেন। এরপর ১৯৬৩ সালে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যান এবং সমাজকল্যাণ বিষয়ে উচ্চতর প্রশিক্ষণ নেন। শহীদুল্লাহ তল্কালীন পূর্ব পাকিস্তানের সমাজকল্যাণ বিভাগের সংগঠক হিসাবে কর্মজীবন শুরু করেন। পরে সাবেক ই, পি, আই. ডি. সি.-তে সেন্ট্রাল ক্যাডার অফিসার হিসাবে যােগ দেন। পরবর্তীতে তিনি যশােরের মােবারকগঞ্জ সুগার মিল ও ফরিদপুরের মধুখালী সুগার মিলে কাজ করেন। ১৯৭১ সালে তিনি রাজশাহীর নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলের প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসাবে নিযুক্ত ছিলেন।
মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে মােহাম্মদ শহীদুল্লাহ তার কয়েকজন সহযােগীকে নিয়ে। হাতবােমা তৈরি করেন। তারা কয়েকজন পাকিস্তানি সেনাকে সুগার মিলের ভেতর আটক করে হত্যা করেন। এই ঘটনার প্রতিশােধ নিতে ১৯৭১ সালের ৫ মে পাকিস্তানি সেনারা নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলে হামলা চালায়। এ সময় তারা সুগার মিলের পুকুরপাড়ে শতাধিক বাঙালিকে দাঁড় করিয়ে গুলি করে। মােহাম্মদ শহীদুল্লাহ গুলিবিদ্ধ হয়ে পড়ে যান। তিনি প্রায় পাঁচ ঘণ্টা বেঁচে ছিলেন। যে পুকুরে পাড়ে এই গণহত্যা চালানাে হয়, পরবর্তীতে ওই পুকুরের নাম ‘শহীদ সাগর’ রাখা হয়েছে। মােহাম্মদ শহীদুল্লাহ ১৯৫০ সালে বিয়ে করেন। তাঁর স্ত্রী ও তিন ছেলে ছিল।
সূত্র : শহীদ বুদ্ধিজীবী কোষ – আলী মাে. আবু নাঈম, ফাহিমা কানিজ লাভা