মাে. নজরুল ইসলাম
মাে. নজরুল ইসলাম জন্মেছিলেন ১৯৩২ সালের ৩ আগস্ট, শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া উপজেলার আটপাড়া গ্রামে। তার বাবার নাম মাে. মুনিরুদ্দিন আহমদ। ম্যাট্রিক ও প্রথম বিভাগে আই, এসসি. পাস করার পর ১৯৫৯ সালে নজরুল বি. এসসি. (মেকানিক্যাল) ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করেন। এরপর ১৯৫৯ সালে তিনি ঢাকায় ওয়াপদায় পানি শাখায় যােগ দেন। এরপর ১৯৬২ সালে তিনি লন্ডন থেকে ইলেকট্রিক ইঞ্জিনিয়ারিংএ ডিপ্লোমা লাভ করেন। ১৯৬৩ সালে নজরুল ইলেকট্রিক সাপ্লাই অফিসে যােগ দেন। নিহত হওয়ার সময় পর্যন্ত এ অফিসে তিনি ডেপুটি ডিরেক্টর পদে ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধে সরাসরি যােগ না দিলেও মাে. নজরুল ইসলাম মুক্তিযােদ্ধাদের নানাভাবে সহযােগিতা করেছেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে তার পরিকল্পনা ও নির্দেশে ২০ জুলাই তারিখে ঢাকায় পাঁচটি বিদ্যুৎকেন্দ্র ধ্বংস করা হয়। ক্র্যাক প্লাটুনের সদস্যরা এ হামলা চালায়। ২নং সেক্টরের অপারেশনের সুবিধার জন্য ২২ জুলাই তিনি ভূমি জরিপ অধিদফতর থেকে অত্যন্ত দুঃসাহসিকতার সাথে বাংলাদেশের ব্র-প্রিন্ট সংগ্রহ করেন।
এরপর তিনি পালিয়ে ত্রিপুরার আগরতলার মেলাঘরে অবস্থিত ২নং সেক্টরের সদর দফতরে যান। প্রকৌশলী নজরুলকে নবগঠিত বাংলাদেশ সরকারের বিদ্যুৎ ও শক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা হিসাবে নিয়ােজিত করা হয়। আগরতলা থেকে দেশে ফেরার পর ১৮ সেপ্টেম্বর তারিখে তিনি নিহত হন। কুমিল্লা জেলার কসবা উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় শালদা নদীর তীরে কোলাপাথর নামক জায়গায় ৪৯ জন বীর মুক্তিযােদ্ধার সাথে তাকে সমাহিত করা হয়। প্রকৌশলী নজরুল ইসলামের সম্মানে ১৯৭২ সালে ঢাকার হাটখােলা সড়কটিকে ‘শহীদ নজরুল ইসলাম সড়ক নামকরণ করা হয়েছিল। এছাড়া তাঁর নিজ জেলা শরীয়তপুরে ‘শহীদ নজরুল ইসলাম বালিকা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়। ১৯৯৬ সালে তার নামে স্মারক ডাকটিকিট প্রকাশ করা হয়। শহীদ প্রকৌশলী মাে. নজরুল ইসলামের স্ত্রী হাজেরা নজরুল শিক্ষাবিদ ও কথাসাহিত্যিক। তাদের সংসারে তিন ছেলে ও এক মেয়ে ছিল।
সূত্র : শহীদ বুদ্ধিজীবী কোষ – আলী মাে. আবু নাঈম, ফাহিমা কানিজ লাভা