You dont have javascript enabled! Please enable it!
তিমিরকান্তি দেব
তিমিরকান্তি দেবের জন্ম মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর উপজেলার গণেশপুর গ্রামে। তার বাবার নাম তিশীত কুমার, মায়ের নাম লীলাবতী। তিনি ছিলেন বাবামায়ের তৃতীয় সন্তান। তিমিরকান্তির স্কুল ও কলেজ জীবনের কিছু সময় কেটেছে মৌলভীবাজারে। ১৯৬৭ সালে হবিগঞ্জের বৃন্দাবন কলেজ থেকে তিনি স্নাতক ডিগ্রি নেন। তিমিরকান্তি ১৯৬৯ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে এম. এ. ডিগ্রি পান। শিক্ষক পরিবারের সন্তান তিমিরকান্তি শিক্ষকতাকেই পেশা হিসাবে বেছে নেন। মানুষ হিসাবে তিনি ছিলেন শিশুর মতাে সরল, কিন্তু দায়িত্ব পালনে নিষ্ঠাবান। তিনি বলতেন, “যারা জ্ঞানী হন, তাঁদের ধন ও ঐশ্বর্য হচ্ছে তাদের জ্ঞান।” তিনি ছাত্রদের প্রায়ই বলতেন, “আগে নিজে জ্ঞানী হও, পরে অন্যকে জ্ঞান দান করাে। সমাজ রাষ্ট্র ও মানুষের কল্যাণের জন্য এই জ্ঞানকে শক্তি হিসাবে কাজে লাগাও।” তিনি বিশ্বাস করতেন, শিক্ষকরা হচ্ছেন সমাজ ও জাতির বিবেক।  ১৯৭১ সালে তিনি ছিলেন কিশােরগঞ্জ কলেজের অধ্যাপক। মুক্তিযুদ্ধের শুরুতে তিনি গ্রামে চলে যান। কিন্তু সেপ্টেম্বর মাসে পরিবারের সদস্যদের বাধা উপেক্ষা করেই কাজে যােগ দিতে আসেন। ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত কলেজের হাজিরা খাতায় তার স্বাক্ষর রয়েছে। জানা যায়, ৬ ডিসেম্বর তিনি কলেজে আসার পর কলেজ সেক্রেটারি তাকে ডেকে পাঠান। কলেজ সেক্রেটারির সাথে দেখা করার জন্য তিনি কলেজ থেকে বের হওয়ার পর আর ফিরে আসেননি। তার কোনাে খোঁজও পাওয়া যায়নি। কলেজ সেক্রেটারি ছিলেন রাজাকার বাহিনীর সদস্য। এই রাজাকারই তিমিরকান্তিকে পাকবাহিনীর হাতে তুলে দেয়। স্বাধীনতার পর মুক্তিযােদ্ধারা কলেজ সেক্রেটারিকে হত্যা করে। কিন্তু তিমিরকান্তি দেবের আর কোনাে খােজ পাওয়া যায়নি। শহীদ তিমিরকান্তি দেব অবিবাহিত ছিলেন।
সূত্র : শহীদ বুদ্ধিজীবী কোষ –  আলী মাে. আবু নাঈম, ফাহিমা কানিজ লাভা
error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!