দিগেন্দ্র চন্দ্র এন্দ
দিগেন্দ্র চন্দ্র এন্দ ১৯০৫ সালের ১১ মে সিলেট জেলার সদর উপজেলার মির্জা জাঙ্গাল গ্রামে জন্ম নেন। তার বাবার নাম বরদা কিঙ্কর এন্দ, মায়ের নাম ত্রিপুরা। সুন্দরী এন্দ। বরদা কিঙ্কর ছিলেন জমিদার এবং তিনি কলকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে বি. এসসি. পাস করেছিলেন। দিগেন্দ্র চন্দ্র আসামের শিলচর স্কুল থেকে ১৯২০ সালে প্রথম বিভাগে ম্যাট্রিক পাস করেন। তিনি কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে ১৯২২ সালে প্রথম বিভাগে আই. এসসি, এবং ১৯২৪ সালে প্রথম বিভাগে বি, এসসি. পাস করেন। এরপর ১৯২৯ সালে কলকাতা মেডিকেল কলেজ থেকে এম. বি. পাস করেন। পরীক্ষায় অসাধারণ কৃতিত্বের জন্য তিনি স্বর্ণপদক পেয়েছিলেন। সিলেট পৌরসভার মেডিকেল অফিসার এবং সিলেট মেডিকেল স্কুলের অধ্যাপক হিসাবে দিগেন্দ্র চন্দ্রের কর্মজীবন শুরু হয়। মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি অবসর জীবনযাপন করছিলেন।
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর সকাল ৯টার দিকে একটি মর্টার শেল এসে ডা. দিগেন্দ্র চন্দ্র এন্দর বাড়িতে আঘাত করে। পুরাে বাড়িটি মুহূর্তেই ধ্বংস হয়ে যায় এবং মর্টার শেলের আঘাতে সাথে সাথেই মারা যান ডা, দিগেন্দ্র চন্দ্র এন্দ, তার স্ত্রী সুনীতি বালা, তাদের বড় ছেলে দিব্যেন্দু এন্দের শ্বশুর প্রকৌশলী গােপেশ দাশ। বাড়িতে উপস্থিত সবাই গুরুতর আহত হয়েছিল। আহতদের হাসপাতালে নেওয়া হয়। এদিন বিকালে মারা যান ডা. দিগেন্দ্র চন্দ্রের বড় ছেলে দিব্যেন্দু এন্দ, মেয়ে শিখা এন্দ এবং দিব্যেন্দুর ছেলে অপু এন্দ। তিনদিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে মারা। যান ডা. দিগেন্দ্র চন্দ্রের আরেক মেয়ে শিবানী এন্দ এবং দিব্যেন্দু এন্দের সাত মাস বয়সী মেয়ে পম্পা এন্দ। সাতদিন পর মারা যান দিব্যেন্দুর স্ত্রী খনা এন্দ। দিব্যেন্দুর মেজো ছেলে পার্থ সখা এন্দের বাঁ হাত চিরদিনের জন্য অকেজো হয়ে যায়। সেদিন। মর্টার শেলের আঘাতে এন্দ পরিবারের আটজন এবং একজন আত্মীয়সহ মােট নয়জন শহীদ হন। শহীদ ডা. দিগেন্দ্র চন্দ্র এন্দ ও সুনীতি বালা এন্দের সংসারে তিন ছেলে ও ছয় মেয়ে ছিল।
সূত্র : শহীদ বুদ্ধিজীবী কোষ – আলী মাে. আবু নাঈম, ফাহিমা কানিজ লাভা