প্রিয়সাধন সরকার
১৯৪১ সালে ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলার পয়ারী গ্রামে প্রিয়সাধন সরকারের জন্ম। তিনি ছিলেন বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান। কিশাের বয়স থেকে প্রিয়সাধন কবিতা ও নাটক লিখতেন, নাটকে অভিনয়ও করতেন। তার একটি কবিতা ও একটি নাটকের বই ছাপা হয়েছিল। এছাড়া ভাব দর্পণ’ নামে একটি বই তিনি সম্পাদনা করেছিলেন। তার বেশিরভাগ কবিতা ও নাটক অপ্রকাশিত রয়ে গেছে। প্রিয়সাধন সরকার ১৯৬৩ সালে আনন্দ মােহন কলেজ থেকে বি, এ. পাস করার পর শিক্ষকতা পেশায় যােগ দেন। পরবর্তীতে তিনি বি, এড. ট্রেনিং নেন। ১৯৭১ সালে তিনি পয়ারী গােকুলচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসাবে কর্মরত ছিলেন। মার্চের অসহযােগ আন্দোলনের সময় তিনি বিদ্যালয়ের উপরের ক্লাসের ছাত্রদের সংগঠিত করেন এবং তাঁদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে এই ছেলেরা প্রায় সবাই সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতে গিয়ে প্রশিক্ষণ নেয় এবং মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়। মুক্তিযুদ্ধের শুরুতেই তিনি স্বাধীন বাংলার পতাকা জোগাড় করে নিজের বাড়িতে উড়িয়ে দেন। এপ্রিল মাসের পর বেশ কিছুসংখ্যক শরণার্থী প্রিয়সাধন সরকারের বাড়িতে। আশ্রয় নেয়। মাঝে মাঝে মুক্তিযােদ্ধারাও তাঁর বাড়িতে এসে রাতে থাকত, খেত। ১৯৭১ সালের ১৯ জুলাই আরও দুজন উকিল, দুজন শিক্ষক, একজন পােস্ট মাস্টার। এবং একজন প্রবীণ ব্যক্তির সাথে পাকবাহিনী তাকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃতরা সবাই ছিলেন হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ। এদের কোনাে খোঁজ আর পাওয়া যায়নি। শহীদ প্রিয়সাধন সরকারের স্ত্রীর নাম মঞ্জুলা সরকার। তাদের সংসারে এক ছেলে ছিল।
সূত্র : শহীদ বুদ্ধিজীবী কোষ – আলী মাে. আবু নাঈম, ফাহিমা কানিজ লাভা