বদিউল আলম চৌধুরী (ক্যাপ্টেন)
বদিউল আলম চৌধুরীর জন্ম ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলার জয়পুর গ্রামে, ১৯৩৯ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর। তার বাবার নাম। মৌলভী আহসানউল্লাহ, মায়ের নাম রইওদুন্নেছা। চার ভাই ও দুই বােনের মধ্যে তিনি ছিলেন তৃতীয়। বদিউল আলম চৌধুরী ১৯৫৩ সালে এম. বি. বি. এস, পাস করে সিলেট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মেডিকেল অফিসার হিসাবে যােগ দেন। পরে ১৯৬৫ সালের ১৫ জুন তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মেডিকেল কোরে যােগ দেন। তিনি পাকিস্তানের লাহাের ও খরিয়া ক্যান্টনমেন্ট এবং যশাের ও কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্টে দায়িত্ব পালন করেন। প্রশিক্ষণের জন্য তিনি চীনের গিলগিট গিয়েছিলেন। ১৯৭০ সালে ক্যাপ্টেন বদিউল আলম চৌধুরীকে কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্টের ৪০ নম্বর ফিল্ড অ্যাম্বুলেন্সের সেকেন্ড ইন কমান্ড পদে বদলি করা হয়। ১৯৭১ সালের ২৯ মার্চ কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্টে বাঙালি সেনা ও পুলিশের সাথে পাকিস্তানি সেনাদের যুদ্ধ শুরু হয়। পরদিন ৩০ মার্চ সকালে অফিসে যাওয়ার পর থেকে তার আর কোনাে খোজ পরিবারের সদস্যরা পাননি। জানা যায়, তিনি কুমিল্লা পুলিশ লাইন্সে গিয়ে চিকিৎসা দেওয়ার সুযােগে অনেক আহত বাঙালি পুলিশকে পালিয়ে যেতে সাহায্য করেছেন। এছাড়া বাঙালির মুক্তি সংগ্রামের প্রতি সহানুভূতিসম্পন্ন সেনাদেরও তিনি পালাতে সাহায্য করেছেন।
জানা যায়, অন্য বাঙালি সেনা অফিসারদের সাথে ৩০ মার্চ সকালে তাকে বন্দি করা হয়। এ দিন বিকালে অন্য বাঙালি অফিসারদের সাথে ডা. ক্যাপ্টেন বদিউল আলম চৌধুরীকে ব্রিগেড অফিসের একপাশে একটা গর্তের পাশে দাঁড় করিয়ে ব্রাশফায়ার করে হত্যা করা হয়। এখানেই তাদের সবাইকে মাটিচাপা দেওয়া হয়। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর তার লাশ কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্টের সামরিক হাসপাতালের সামনে পুনরায় সমাহিত করা হয়। শহীদ ডা, ক্যাপ্টেন বদিউল আলম চৌধুরীর স্ত্রীর নাম রশিদা আলম চৌধুরী। তাঁদের সংসারে দুই মেয়ে জন্মায়।
সূত্র : শহীদ বুদ্ধিজীবী কোষ – আলী মাে. আবু নাঈম, ফাহিমা কানিজ লাভা