You dont have javascript enabled! Please enable it! বাসের আলী - সংগ্রামের নোটবুক
বাসের আলী
বাসের আলীর জন্ম নওগাঁ জেলার সদর উপজেলার বক্তারপুর গ্রামে। তার বাবার নাম ফরতুল সরদার, মায়ের নাম আফরােজা বেওয়া।  বাসের আলী ছিলেন একজন নাট্যাভিনেতা। ‘মিশর কুমারী’, শাহজাহান’, ‘সিরাজউদ্দৌলা’ প্রভৃতি নাটকে অভিনয় করে তিনি সুনাম কুড়িয়েছিলেন। ফুটবল। খেলাতেও ছিল তার উৎসাহ। প্রাণবন্ত, রসিক আর হাসিখুশি মানুষ ছিলেন তিনি। গ্রামে মুক্তিযােদ্ধারা এলে তাদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করেছেন বাসের। তার। চাচাতাে ভাই ও বন্ধুপ্রতিম অ্যাডভােকেট আবদুল জব্বার মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়ে শহীদ হন। শহীদ জব্বারসহ অন্য মুক্তিযােদ্ধাদের সাথে বাসের আলীর ঘনিষ্ঠ যােগাযােগ ছিল।  ১৯৭১ সালের ২ ডিসেম্বর বিকালে স্থানীয় বালুভরা হাটে গিয়েছিলেন বাসের আলী। ফেরার পথে রাজাকাররা তাকে আটক করার পর গুলি করে হত্যা করে।
তার ছেলে এমদাদুল হকের বর্ণনা থেকে জানা যায়, রাজাকারদের ওই দলে ছিল মােসলেম উদ্দিন, তার বাবা কছিমুদ্দিন ও সাজ্জাদ হােসেনসহ আরও কয়েকজন। রাজাকাররা প্রথম গুলি করে বাসের আলীর বুকে। বুকে গুলি লাগার পরও তিনি কিছুদূর দৌড়ে যান। তখন তাকে ধরে মাটিতে ফেলে দেয় রাজাকাররা। তিনি শেষ শক্তি দিয়ে একজনের রাইফেল কেড়ে নিয়ে দৌড় দেন। এরপর রাজাকাররা বাসেরকে চারদিক থেকে ঘেরাও করে মাটিতে ফেলে বুকে নল ঠেকিয়ে পরপর কয়েকটি গুলি করে। একজন গুলি করে তার কানের পাশে। সর্বমােট পাঁচটি গুলির চিহ্ন ছিল বাসেরের দেহে। জনতাকে হটানাের জন্য রাজাকাররা ১০-১২টি ফাকা। গুলি ছােড়ে। তারা বাসেরের লাশের ওপর লাথি দিয়ে নারকীয় উল্লাস করে। (প্রথম আলাে, ১৪ জানুয়ারি ২০১৫) শহীদ বাসের আলীর স্ত্রীর নাম জিন্নাতুন নেছা। তাদের সংসারে এক ছেলে ও এক মেয়ে ছিল। শহীদ বাসের আলীর নামে নওগাঁয় কোনাে স্মৃতিচিহ্ন নেই। তার স্মৃতিতে বাংলাদেশ ডাকবিভাগ ১৯৯৬ সালে একটি স্মারক ডাকটিকিট প্রকাশ করেছিল।
সূত্র : শহীদ বুদ্ধিজীবী কোষ –  আলী মাে. আবু নাঈম, ফাহিমা কানিজ লাভা