You dont have javascript enabled! Please enable it! বীরেন্দ্র লাল চৌধুরী - সংগ্রামের নোটবুক
বীরেন্দ্র লাল চৌধুরী
বীরেন্দ্র লাল চৌধুরী ছিলেন চট্টগ্রামের প্রবর্তক সংঘ’, ‘প্রবর্তক বিদ্যাপীঠ’ ও ‘আরােগ্য নিকেতনের প্রতিষ্ঠাতা। বিখ্যাত স্বাধীনতা সংগ্রামী মতিলাল রায় প্রতিষ্ঠিত প্রবর্তক সংঘের শাখা ছিল এটি। প্রবর্তক সংঘে অনাথ শিশুদের আশ্রয় দেওয়া হতাে, তাদের শিক্ষিত ও স্বাবলম্বী হয়ে ওঠার ব্যবস্থা করা হতাে। বীরেন্দ্র লাল চৌধুরী বলতেন, “কাজ করে যাও, ফলের জন্য ভেব না।” তিনি। বলতেন, জ্ঞানের অনুশীলনও কাজ, আর জ্ঞানের অনুশীলন করতে হবে পূজার মতাে। ধর্ম বলতে তিনি মানবধর্মকে বুঝতেন। তিনি বলতেন, মানুষকে কখনও ঘৃণা করতে নেই। তিনি ছিলেন অত্যন্ত স্নেহপ্রবণ মানুষ। কঠোর নিয়ম-শৃঙ্খলার মধ্যে তিনি ছাত্রছাত্রীদের মানবিক মানুষ হিসাবে গড়ে তুলতে সচেষ্ট ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে বীরেন্দ্র লাল চৌধুরী প্রবর্তকের তিন শতাধিক ছাত্রছাত্রীদের কয়েকটি গ্রুপে ভাগ করে গ্রামের দিকে নিরাপদ আশ্রয়ে পাঠিয়ে দেন। পরের ধাপে বিদ্যাপীঠের শিক্ষক ও অন্য কর্মচারীদের নিরাপদ এলাকায় পাঠিয়ে কয়েকজন সঙ্গীসহ নিজে রয়ে গেলেন প্রবর্তক সংঘে। ১৯৭১ সালের ৩০ মার্চ পাকসেনারা হানা দেয় প্রবর্তক বিদ্যাপীঠে। বীরেন্দ্র লাল চৌধুরীসহ অন্য সবাইকে আরােগ্য নিকেতনের বারান্দায় সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে ব্রাশফায়ার করে হত্যা করা হয়। নিজের জীবন দিয়ে গড়ে তােলা প্রতিষ্ঠানের মাটিতেই নিজের রক্ত দিয়ে। জীবনসাধনার অর্ঘ্য নিবেদন করে গেলেন অকৃতদার বীরেন্দ্র লাল চৌধুরী।
সূত্র : শহীদ বুদ্ধিজীবী কোষ –  আলী মাে. আবু নাঈম, ফাহিমা কানিজ লাভা