You dont have javascript enabled! Please enable it! মফিজ উদ্দিন খান - সংগ্রামের নোটবুক
মফিজ উদ্দিন খান
মফিজ উদ্দিন খান ১৯২৭ সালের ১ জানুয়ারি ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁও উপজেলার বড়বাড়ি গ্রামে জন্ম নেন। তাঁর বাবার নাম মাে. ইসমাইল খান, মায়ের নাম শরিয়তুন্নেছা। সাত ভাই ও এক বােনের মধ্যে তিনি ছিলেন ষষ্ঠতম। মফিজ উদ্দিন খান ১৯৪৩ সালে স্থানীয় ধলা হাই স্কুল থেকে ম্যাট্রিক এবং ১৯৪৫ সালে আনন্দ মােহন কলেজ থেকে আই, এসসি পাস করেন। এরপর ১৯৫২ সালে ময়মনসিংহের লিটন মেডিকেল স্কুল থেকে এল, এম, এফ, পাস করেন। ১৯৫২ সালেই তিনি পূর্ব পাকিস্তান সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগে মেডিকেল অফিসার হিসাবে যােগ দেন। চাকরির ফাকে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে ১৯৫৭ সালে এম, বি, বি, এস, ডিগ্রি নেন। এরপর তিনি পাকিস্তানের লাহােরে মায়াে হাসপাতালে মেডিকেল অফিসার হিসাবে যােগ দেন।
তিনি বিভিন্ন সময় ঢাকার এম. ডি. টি. আই., ইপি, এইচ, এস, ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুলে চাকরি করেন। ১৯৬৯ সালে ডায়াবেটিক সমিতির মেডিকেল রিসার্চ সেন্টারে গবেষণা সহকারী হিসাবে যােগ দেন। ফুটবল খেলা, বাঁশি বাজানাে, মঞ্চ নাটকে অভিনয় ছিল ডা. মফিজ উদ্দিনের শখ। মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি গােপনে মুক্তিযােদ্ধাদের সহযােগিতা করেছেন। মুক্তিযােদ্ধারা তার বাসায় আসতেন। তিনি তখন থাকতেন ১০৬, পুরাতন এলিফ্যান্ট রােডে (বর্তমানে জাহানারা ইমাম সড়ক)। স্বাধীনতার দুদিন আগে ১৪ ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদারদের বিমান হামলার সময় তাঁর বাসভবনের ওপর বােমা পড়ে। বােমার আঘাতে তিনি, তার স্ত্রী হালিমা, তার শ্যালক গােলাপ এবং তার ছয় ছেলেমেয়ের সবাই গুরুতর আহত হন। ডা. মফিজ উদ্দিন খান এবং তার ছেলে সপ্তম শ্রেণির ছাত্র মিল্টন সেদিনই মারা যান। আহতদের সবাইকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরদিন ১৫ ডিসেম্বর মারা যান তার শ্যালক গােলাপ। ডা. মফিজের স্ত্রী হালিমা ও ছেলেমেয়েরা বেশ কয়েকদিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। ডা. মফিজ, তার ছেলে মিল্টন ও শ্যালক গােলাপকে ১৭ ডিসেম্বর ঢাকার আজিমপুর গােরস্তানে সমাহিত করা হয়।  শহীদ ডা. মফিজ উদ্দিন খানের স্ত্রীর নাম হালিমা আকতার খাতুন। তাদের সংসারে তিন মেয়ে ও তিন ছেলে ছিল।
সূত্র : শহীদ বুদ্ধিজীবী কোষ –  আলী মাে. আবু নাঈম, ফাহিমা কানিজ লাভা