মকবুল আহমদ
মকবুল আহমদের জন্ম ১৯২৭ সালে, চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারীর উত্তর মাদার্শা গ্রামে। তার বাবার নাম নজীর আহমদ, মায়ের নাম মেহেরুন্নেসা। তিন ভাই ও এক বােনের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার ছােট। মকবুল আহমদ তকালীন ‘চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল ও স্কুল থেকে ১৯৫১ সালে এল, এম, এফ, ডিগ্রি নেন। এরপর তিনি চট্টগ্রামের রাউজান থানার নােয়াপাড়া সরকারি ডিসপেন্সারিতে মেডিকেল অফিসার হিসাবে কাজে যােগ দেন। তিনি একে একে মিরসরাই আবুতরব সরকারি ডিসপেন্সারি ও বাঁশখালীর বনিগ্রাম সরকারি ডিসপেন্সারিতে মেডিকেল অফিসারের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬৭ সালে ডা. মকবুল চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে আবাসিক মেডিকেল অফিসার হিসাবে যােগ দেন। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের পর পাকিস্তানি সেনাদের হামলার মুখে বাঙালি পুলিশ, ই, পি, আর, এবং সেনাসদস্যরা প্রতিরােধ গড়ে তােলে। এতে অনেকে আহত হয়। ডা, মকবুল অনেক আহত মুক্তিযােদ্ধার চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন এবং পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে তাদের লুকিয়ে থাকারও ব্যবস্থা করেন।
এপ্রিল মাসের শুরুর দিকে চট্টগ্রাম শহর পাকিস্তানিদের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়। এ সময় পাকিস্তানি সেনারা বাঙালিদের দেখামাত্র গুলি চালাত। এ অবস্থায় ডা. মকবুল তাঁর স্ত্রী ও ছয় ছেলেমেয়ে নিয়ে গ্রামের বাড়ি চলে যান। কিছুদিন পর তিনি খবর পান যে চট্টগ্রাম শহরের খালি বাড়িঘরে লুটপাট চলছে। এ খবর শুনে ১৩ এপ্রিল তিনি গ্রাম থেকে চট্টগ্রাম শহরে নিজের বাসায় যান। পরদিন সকালে একদল পাকিস্তানি সেনা অবাঙালি সহযােগীসহ তার বাসায় হানা দেয়। তারা ডা, মকবুল আহমদকে ধরে নিয়ে যায়। শােনা যায়, তাকে ক্যান্টনমেন্টে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল এবং সেখানেই তাকে হত্যা করা হয়। শহীদ ডা. মকবুল আহমদের স্ত্রীর নাম নূরজাহান আহমদ। তাদের সংসারে দুই মেয়ে ও ছয় ছেলে ছিল।
সূত্র : শহীদ বুদ্ধিজীবী কোষ – আলী মাে. আবু নাঈম, ফাহিমা কানিজ লাভা