You dont have javascript enabled! Please enable it! মাহমুদ হােসেন আকন্দ - সংগ্রামের নোটবুক
মাহমুদ হােসেন আকন্দ
মাহমুদ হােসেন আকন্দ ময়মনসিংহ শহরে বাংলা ১৩৪৮ সালের ১৪ বৈশাখ (১৯৪১ সালের এপ্রিল মাসে) জন্ম নেন। তার বাবার নাম মােশাররফ হােসেন আকন্দ ও মায়ের নাম বেগম জেবুন্নেসা। আট ভাইবােনের মধ্যে মাহমুদ হােসেন ছিলেন সবার  মাহমুদ ময়মনসিংহ জিলা স্কুল থেকে ম্যাট্রিক এবং আনন্দ মােহন কলেজ থেকে আই, এসসি, পাস করেন। তিনি ১৯৬৪ সালে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের যন্ত্রকৌশল বিভাগ থেকে স্নাতক ডিগ্রি পান। এরপর তিনি ঢাকার ‘সুইস বােরিং কোম্পানি লিমিটেডে’ প্রকৌশলী হিসাবে যােগ দেন। মাহমুদ ১৯৬৫ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে শিক্ষানবিশ কমিশন অফিসার হিসাবে যােগ দেন। দুই বছর তিনি পাকিস্তানের মিলিটারি একাডেমিতে প্রশিক্ষণ নেন। প্রশিক্ষণ শেষে ক্যাপ্টেন হিসাবে তাকে পাকিস্তানেই নিয়ােগ দেওয়া হয়।
১৯৬৮ সালে তাকে ঢাকায় এবং ১৯৬৯ সালে চট্টগ্রামে বদলি করা হয়। ওই বছরই লুৎফুন্নেছা হেলেনের সাথে তার বিয়ে হয়। মাহমুদের বাবা মােশাররফ হােসেন ছিলেন ময়মনসিংহ শহরের একজন নামকরা আইনজীবী। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসাবে জাতীয় পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। পারিবারিকভাবেই মাহমুদ বাঙালির স্বাধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের সাথে যুক্ত ছিলেন। ১৯৭১ সালে মাহমুদ তার স্ত্রীসহ চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্টে বাস করতেন। ১৯৭১ সালের ২৭ মার্চ থেকে পাকিস্তানি সেনারা মাহমুদ ও লুফুন্নেসাকে গৃহবন্দি করে রাখে। ১০-১৫ দিন পর মাহমুদ তাঁর স্ত্রীকে শ্বশুরবাড়ি রেখে ক্যান্টমেন্টে ফিরে যান। এরও ৭-৮ দিন পর এক সন্ধ্যায় কড়া পাহারার মধ্যে মাহমুদকে মাত্র এক ঘণ্টার জন্য স্ত্রী-পরিজনদের সাথে দেখা করতে নিয়ে আসা হয়। পাকিস্তানি ক্যাপ্টেন মাহমুদের আত্মীয়দের বলেছিলেন যে মাহমুদকে মেজর পদে উন্নীত করা হবে এবং তাকে পাকিস্তানে পাঠানাে হবে। যদিও সেদিন মাহমুদ ছিলেন অত্যন্ত উদ্বিগ্ন এবং বিষন্ন। এর কয়েকদিন পর মাহমুদের স্ত্রীর বড় ভাই ওই পাকিস্তানি ক্যাপ্টেনের সাথে দেখা করতে গেলে তাঁকে জানানাে হয় যে মাহমুদ পশ্চিম পাকিস্তান চলে গেছেন। এরপর ওই ক্যাপ্টেনের পরামর্শে মাহমুদের আত্মীয়রা ক্যাপ্টেনের বাসা থেকে মাহমুদের প্রিয় মােটরসাইকেলটি নিয়ে আসেন। শহীদ মাহমুদ হােসেন আকন্দের নিখোঁজ বা মৃত্যু সম্পর্কে আর কিছু জানা যায়নি।
সূত্র : শহীদ বুদ্ধিজীবী কোষ –  আলী মাে. আবু নাঈম, ফাহিমা কানিজ লাভা