মমতাজ হােসেন
চাঁপাইনবাবগঞ্জের ইসলামপুরে ১৯২৭ সালে মমতাজ হােসেনের জন্ম। তাঁর বাবার নাম ওসমান আলী, মায়ের নাম মরিয়ম বেগম। দুই ভাই ও এক বােনের মধ্যে মমতাজ ছিলেন। সবার ছােট। মমতাজ রাজশাহীর গােদাগাড়ির বাসুদেবপুর হাই স্কুল
থেকে ম্যাট্রিক পাস করেন। এরপর তিনি ময়মনসিংহের লিটন। মেডিকেল স্কুল থেকে এল, এম, এফ, পাস করেন। তিনি নিজের এলাকাতেই প্রাইভেট প্র্যাকটিস করতেন। মুক্তিযুদ্ধের শুরুর দিকে রাজশাহী থেকে একজন আওয়ামী লীগ কর্মী তাঁর। ভাগ্নেসহ ডা, মমতাজের চাপাইনবাবগঞ্জ শহরের বাসায় এসে আশ্রয় নেন। এ খবর। জানাজানি হয়ে গেলে ২০ এপ্রিল সকাল ১১টার দিকে কয়েকজন পাকসেনা এবং বাঙালি রাজাকার তার বাসায় হানা দেয়। প্রথমে তারা ডা, মমতাজের বাড়ি লুট করে।
পরে বাড়ির সবাইকে একটা ঘরে আটকে পেট্রোল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয়। এ সময় তাদের গুলিতে ডা, মমতাজের বড় মেয়ে মাহবুবা এবং আওয়ামী লীগ কর্মীর ভাগ্নে মারা যান। ডা, মমতাজ, তার দুই মেয়ে মাহমুদা ও মাসতুরা গুলিবিদ্ধ হন। ডা, মমতাজের উরুতে গুলি বিধেছিল। পাড়া-প্রতিবেশীদের সহযােগিতায় ডা, মমতাজ তার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে। একটি গরুর গাড়িতে করে নামশঙ্করবাটি গ্রামে গিয়ে আশ্রয় নেন। একজন। কম্পাউন্ডারের সহযােগিতায় তিনি উরুর গুলি বের করার চেষ্টা করেন। এতে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়। রক্তক্ষরণের ফলে ২০ এপ্রিল সন্ধ্যায় ডা, মমতাজ হােসেন মারা যান। পরদিন মারা যায় তার ছােট মেয়ে মাসতুরা। বড় মেয়ে মাহবুবাসহ ডা.। মমতাজ হােসেনকে নামশঙ্করবাটি গ্রামে সমাহিত করা হয়, আর ছােট মেয়ে। মাসতুরাকে সমাহিত করা হয় গােদাগাড়ীর বাসুদেবপুরে।। শহীদ ডা. মমতাজ হােসেনের স্ত্রীর নাম জাহানারা বেগম। তাদের সংসারে তিন মেয়ে ও তিন ছেলে ছিল।
সূত্র : শহীদ বুদ্ধিজীবী কোষ – আলী মাে. আবু নাঈম, ফাহিমা কানিজ লাভা