মখলেছার রহমান
মখলেছার রহমান ছিলেন রেলওয়ের কর্মকর্তা। ১৯৭১ সালে তার কর্মস্থল ছিল বগুড়ার সান্তাহার রেলস্টেশন, তিনি ছিলেন ট্রেনের টিকিট কালেক্টর। মখলেছার রহমানের গ্রামের বাড়ি নওগাঁ জেলার বদলগাছী উপজেলার পাহাড়পুরের কাছে। পাঁচঘড়িয়া গ্রামে। তিনি ছিলেন তার বাবা-মায়ের ১১তম সন্তান। ১৯৭১ সালের ২৮ জুলাই মখলেছার রহমানকে সান্তাহার রেলস্টেশন থেকে আটক করে পাকবাহিনী। একদিন সেখানে তাকে আটক রেখে নির্যাতন চালানাে হয়। পরের দিন ২৯ জুলাই তাঁকে নিয়ে আসা হয় নাটোর তখন নাটোর ছিল পাকিস্তানি সেনাদের উত্তরবঙ্গের প্রধান ঘাটি। তাকে নাটোর জেলখানায় বন্দি করা হয়। জেলেও তার ওপর চালানাে হয় নির্মম নির্যাতন। মখলেছার রহমানের বড় ভাই তাঁকে মুক্ত করার জন্য স্থানীয় রাজাকার ও শান্তি বাহিনীর নেতাদের কাছে অনেক অনুনয়-বিনয় করেও ব্যর্থ হন। ১৯৭১ সালে ৩ আগস্ট মখলেছার রহমান ও আরও পাঁচজন বন্দিকে জেল থেকে বের করে অবাঙালিদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। মখলেছারের সহবন্দিদের মধ্যে ছিলেন একজন পুলিশের দারােগা এবং একজন রেলস্টেশন মাস্টার। তাঁদের সবাইকে অবাঙালিরা হাত পিছমােড়া করে বেঁধে ট্রেনে করে আত্রাইঘাটে নিয়ে যায়। সেখানে আত্রাই নদীর হাঁটুজলে নদীর দিকে মুখ করে তাঁদের দাঁড় করানাে হয়। এরপর একসঙ্গে গর্জে ওঠে রাইফেল এবং এস, এল, আর,। তাদের সবার লাশ নদীতে ভেসে যায়।
সূত্র : শহীদ বুদ্ধিজীবী কোষ – আলী মাে. আবু নাঈম, ফাহিমা কানিজ লাভা