বাদশা আলম সিকদার
বাদশা আলম সিকদার ১৯৪১ সালে শরিয়তপুর জেলার লাকার্তা গ্রামের সিকদার বাড়িতে জন্ম নেন। তার বাবার নাম আবদুর রাজ্জাক সিকদার, মায়ের নাম বেলাতুন। নেসা। আট ভাইবােনের মধ্যে বাদশা ছিলেন সবার বড়। বাদশা আলম সিকদার ছিলেন পূর্ব বাংলা সর্বহারা পার্টির নেতা বিপ্লবী সিরাজ সিকদারের বড় ভাই। বাদশার শিক্ষাজীবন শুরু হয় পালং থানা স্কুলে। তিনি পটুয়াখালীর জুবিলী স্কুল থেকে প্রথম বিভাগে ম্যাট্রিক পাস করেন। বাদশা বরিশাল বি. এম. কলেজ থেকে আই, এসসি, পাস করে প্রকৌশল কলেজে (বর্তমান বুয়েট) ভর্তি হন। তিনি অত্যন্ত মেধার স্বাক্ষর রেখে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করেন এবং তৎকালীন সি, অ্যান্ড বি, তে প্রকৌশলী হিসাবে নিয়ােগ পান। পটুয়াখালী, রংপুরে পেশাগত দায়িত্ব পালন করেন বাদশা। সবশেষে তাকে গাইবান্ধায় বিভাগীয় প্রকৌশলী হিসাবে বদলি করা হয়। তখন তাঁর স্ত্রী সন্তানসম্ভবা। ইতােমধ্যে দেশে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়ে যায়। যুদ্ধের মধ্যেই তাদের একটি মেয়ে জন্মায়। বাদশা মুক্তিযােদ্ধাদের অস্ত্র ও অর্থ দিয়ে সহযােগিতা করেছেন। নিজেও সক্রিয়ভাবে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়ার পরিকল্পনা করছিলেন। এমন সময় তালীন। সিভিল এস, ডি, ও, পাকিস্তান সেনাবাহিনী দিয়ে তার বাসা তল্লাশি করে। এ সময়। তার বাসা থেকে মুক্তিযুদ্ধের কিছু কাগজপত্র, পিস্তল, রিভলবার, বন্দুক ইত্যাদি নিয়ে। যায় এবং তাঁকে নজরবন্দি করে রাখে। পরে ১৯৭১ সালের ২৫ এপ্রিল তাকে বাসা। থেকে তুলে নিয়ে যায় পাকবাহিনী। তার বাসার বাবুর্চিকেও তারা ধরে নিয়ে যায়। জানা যায়, আরও কয়েকজন বুদ্ধিজীবীর সাথে তাদের রংপুর ব্রিজের নিচে গুলি করে। হত্যা করা হয়। শহীদ বাদশা আলম সিকদারের লাশ পাওয়া যায়নি।
সূত্র : শহীদ বুদ্ধিজীবী কোষ – আলী মাে. আবু নাঈম, ফাহিমা কানিজ লাভা