প্রফুল্লকুমার বিশ্বাস
প্রফুল্লকুমার বিশ্বাসের জন্য খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার রংপুর গ্রামে ১৯১০ সালে। তাঁর বাবার নাম ফৌজদার। বিশ্বাস। প্রফুল্লকুমারের শিক্ষাজীবন শুরু হয় দৌলতপুর মুহসিন উচ্চ বিদ্যালয়ে। ১৯৩৩ সালে তিনি ম্যাট্রিক পাস করেন। ১৯৩৫ সালে দৌলতপুর হিন্দু একাডেমী (বর্তমানে সরকারি বি, এল, কলেজ) থেকে আই. এ. এবং ১৯৩৭ সালে বি. এ. পাস করেন। এরপর ১৯৪৬ সালে কলকাতা ডেভিড হেয়ার ট্রেনিং কলেজ থেকে বি. টি. পাস করেন। কলকাতায় তিনি শরীরচর্চা বিষয়ক বুকানন ট্রেনিং’ নিয়েছেন। শিক্ষকতা দিয়েই প্রফুল্ল বিশ্বাসের কর্মজীবন শুরু হয়। পুলিশ সুপারের চাকরি। পেলেও তিনি শিক্ষকতা করাকেই প্রাধান্য দিয়েছিলেন। কর্মজীবনের প্রথমে যশােরের মশিয়াহাটি উচ্চ বিদ্যালয়, পরে খুলনার আড়য়া উদয়ন বিদ্যাপীঠ এবং সবশেষে মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত নিজের গ্রাম রংপুরের কালীবাটি উচ্চ ইংরেজি বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। শিক্ষকতার পাশাপাশি সামাজিক নানা কাজেও প্রফুল্ল বিশ্বাস সম্পৃক্ত ছিলেন। ১৯৪৯ সালে তিনি তৎকালীন পূর্ববঙ্গ তপশীল জাতি ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কার্যকরী কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন।
১৯৪৩ সাল থেকে ১৯৫৩ সাল পর্যন্ত প্রফুল্ল ছিলেন রংপুর ইউনিয়ন বাের্ডের প্রেসিডেন্ট। রংপুর কালীবাটি উচ্চ ইংরেজি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় তার প্রত্যক্ষ অবদান রয়েছে। ১৯৭১ সালের ১৫ এপ্রিল সকালে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী হিন্দু অধ্যুষিত রংপুরে হানা দেয়। জানা যায়, পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সাথে প্রফুল্লকুমার বিশ্বাস তর্কে লিপ্ত হয়েছিলেন। এই তর্কের কারণেই পাকিস্তানিদের সহযােগী বাঙালি ও বিহারি রাজাকারের দল প্রফুল্ল বিশ্বাসকে ধরে নিয়ে তার বাড়ির পাশে খালের পাড়ে নির্মমভাবে জবাই করে হত্যা করে। এদিন পাকিস্তানি ঘাতকদের গণহত্যার শিকার হন ইন্দুভূষণ বিশ্বাস, ভােম্বল। মণ্ডল, লালচাঁদ বিশ্বাস, অমূল্য জোয়ার্দার, অমূল্য মণ্ডল, রাইচরণ মণ্ডল, মথুর ঢালী, মহেন্দ্রনাথ ঢালী, নির্মল ঢালী, নীহার ঢালী, রতন ঢালী ও চণ্ডীরাম বিশ্বাস প্রমুখ।
সূত্র : শহীদ বুদ্ধিজীবী কোষ – আলী মাে. আবু নাঈম, ফাহিমা কানিজ লাভা