You dont have javascript enabled! Please enable it! নাইমুল ইসলাম - সংগ্রামের নোটবুক
নাইমুল ইসলাম
নাইমুল ইসলাম ১৯২৩ বা ১৯২৪ সালে দিনাজপুর জেলার পার্বতীপুরে জন্ম নেন। তার বাবার নাম নুরুল হুদা, মায়ের নাম ফাতেমা খাতুন। সাত ভাই ও এক বােনের মধ্যে তিনি ছিলেন তৃতীয়। নাইমুল ইসলাম ঠাকুরগাঁও সরকারি হাই স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাস করেন। ১৯৫০ সালে তিনি কলকাতা মেডিকেল কলেজ থেকে এম. বি. বি. এস. পাস করেন। সে বছরই তিনি পাকিস্তান নৌ বাহিনীতে যােগ দেন। ১৯৫০ থেকে ১৯৬৪ সাল পর্যন্ত তিনি করাচিতে কর্মরত ছিলেন। পরে তিনি সেনাবাহিনীর মেডিকেল কোরে চলে আসেন। তিনি পাকিস্তানের খাড়িয়া ক্যান্টনমেন্ট ও পেশােয়ার ক্যান্টনমেন্টে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বদলির জন্য লাগাতার চেষ্টা চালিয়ে অবশেষে ১৯৬৮ সালে চট্টগ্রামে বদলি হতে সক্ষম হন। ১৯৭০ সালের অক্টোবরে ডা. মেজর নাইমুল ইসলামকে জয়দেবপুরে সমরাস্ত্র কারখানায় বদলি করা হয়। ১৯৭১ সালের ২৯ মার্চ জয়দেবপুরে সাধারণ মানুষের ওপর পাকিস্তানি। সেনাবাহিনী হামলা চালায়। স্থানীয় জনসাধারণ প্রতিরােধ গড়ে তুললে সংঘর্ষ শুরু হয়। গােলাগুলির শব্দে মেশিন টুলস ফ্যাক্টরির কয়েকজন বাঙালি অফিসার তাদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ডা, নাইমুলের বাসায় আশ্রয় নেন।
বিকাল ৩টার দিকে একদল পাকিস্তানি সেনা তার বাসা ঘিরে ফেলে এবং নাইমুল ইসলামসহ অন্য সব পুরুষকে বের করে নিয়ে যায়। তাদের জিজ্ঞাসাবাদের পর আবার রাতে ফিরিয়ে দিয়ে যায়। এভাবে ২ এপ্রিল পর্যন্ত প্রতিদিনই পুরুষদের সবাইকে ঘর থেকে বের করে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আবার ঘরে ফিরিয়ে দিয়ে যেত। ১৯৭১ সালের ৩ এপ্রিল একটি বড় বাসে করে ওখানকার সমস্ত বন্দিকে সমরাস্ত্র কারখানা থেকে বাইরে নিয়ে আসা হয়। ডা. মেজর নাইমুল ইসলামও নিজের গাড়ি চালিয়ে বাসের পেছনে পেছনে আসেন। বলা হয়েছিল যে তাঁদের সবাইকে ঢাকার ফার্মগেটে পৌছে দেওয়া হবে। কিন্তু তা না করে তাঁদের সবাইকে আইয়ুব খানের সেকেন্ড ক্যাপিটাল বা ঢাকার শেরে বাংলা নগরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে বাঙালি পুরষদের সবাইকে আলাদা করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর থেকে নাইমুল ইসলামের আর কোনাে খোঁজ পাওয়া যায়নি। শহীদ ডা. মেজর নাইমুল ইসলামের স্ত্রীর নাম সুরাইয়া ইসলাম। তাঁদের সংসারে তিন মেয়ে ও এক ছেলে ছিল।

সূত্র : শহীদ বুদ্ধিজীবী কোষ –  আলী মাে. আবু নাঈম, ফাহিমা কানিজ লাভা