নরেন্দ্রনাথ ঘােষ
নরেন্দ্রনাথ ঘােষ ১৯৩৬ সালের ১ ফেব্রুয়ারি টাঙ্গাইলের করটিয়ার মাদারজানি গ্রামে জন্ম নেন। তাঁর বাবার নাম ফটিক চন্দ্র ঘােষ, মায়ের নাম রাধারানী। তিন ভাই ও চার বােনের মধ্যে তিনি ছিলেন পঞ্চম। তার ডাকনাম লঙ্কা। তিনি ১৯৫২ সালে করটিয়া এইচ. এম, ইনস্টিটিউশন থেকে প্রথম বিভাগে ম্যাট্রিক পাস করেন। করটিয়া সা’দত কলেজ থেকে ১৯৫৪ সালে তিনি প্রথম বিভাগে আই. এসসি. এবং ১৯৫৬ সালে বি. এসসি. পাস করেন। এরপর ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে ১৯৬৪ সালে তিনি এম, বি. বি. এস. পাস করেন। ১৯৬৮ সালে তিনি ক্যান্সার রােগের চিকিৎসার ওপর বিশেষ প্রশিক্ষণ নেন। ডা, নরেন্দ্রনাথ ঘােষ ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ থানা স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া থানা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চাকরি করেন। তিনি ফুটবল খেলা, গান, নাচ ও আবৃত্তিতে পারদর্শী ছিলেন। সব সময় বাহুল্য ও চাকচিক্য বর্জন করতেন নরেন্দ্রনাথ।
তিনি যা আয় করতেন তার সবটাই চলে যেত গরিব দুস্থ রােগীদের চিকিৎসা আর ওষুধের পেছনে। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি আহত মুক্তিযােদ্ধাদের চিকিৎসাসহ বিভিন্ন ধরনের সহযােগিতা দিয়েছেন। রাতে মুক্তিযােদ্ধাদের গােপন আস্তানায় ঘুরে ঘুরে তাদের চিকিৎসা করতেন তিনি। এ কারণেই ১৯৭১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর স্থানীয় রাজাকার ও আলবদরদের সহায়তায় পাকিস্তানি সেনাবাহিনী তাকে ধরে নিয়ে যায়। এরপর তার আর কোনাে খোঁজ পাওয়া যায়নি।শহীদ ডা. নরেন্দ্রনাথ ঘােষের স্ত্রীর নাম মিনতি ঘােষ। তাদের সংসারে তিন মেয়ে ও এক ছেলে ছিল। নরেন্দ্রনাথের বাবা জীবিত থাকার কারণে তার স্ত্রী ও ছেলেমেয়েরা পরিবারের সম্পত্তির কোনাে ভাগ পায়নি। এমনকি কোনাে রাষ্ট্রীয় সহযােগিতাও তাঁর পরিবার পায়নি।
সূত্র : শহীদ বুদ্ধিজীবী কোষ – আলী মাে. আবু নাঈম, ফাহিমা কানিজ লাভা