You dont have javascript enabled! Please enable it!
জহিরুল ইসলাম
পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুর জেলার মৈনান গ্রামে ১৯৩৬ সালের ১৯ মার্চ জহিরুল ইসলামের জন্ম। তার বাবার নাম সৈয়দ লুঙ্কর। রহমান চিশতি। জহিরুল ইসলামের পারিবারিক নাম সৈয়দ জহিরুল ইসলাম। তিনি ১৯৫৩ সালে ম্যাট্রিক এবং ১৯৬৫ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক পাস করেন। জহিরুল ইসলাম ম্যাট্রিক পাস করার পরপরই পশ্চিমবঙ্গ রেলওয়েতে কর্মজীবন শুরু করেন। এ সময় তিনি ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে যুক্ত হন ও সদস্যপদ পান। দেশ ভাগের পর ১৯৬৫ সালে তিনি পূর্ব পাকিস্তান চলে আসেন। ঢাকার এসে তিনি এখানকার প্রগতিশীল ও গণতান্ত্রিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক আন্দোলনের সাথে যুক্ত হন। জহিরুল ইসলাম বিভিন্ন সময়ে মওলানা ভাসানীর নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি’, ‘পূর্ব। পাকিস্তানের কমিউনিস্ট পার্টি (মা-লে)’ এবং পূর্ব পাকিস্তান কমিউনিস্ট পার্টির সাথে সক্রিয় ছিলেন। জহিরুল দর্জি কর্মচারী ও প্রেস শ্রমিকদের সংগঠিত করার কাজ করেছেন।
রাজনৈতিক সক্রিয়তার পাশাপাশি জহিরুল ইসলাম সাংস্কৃতিক অঙ্গনেরও একজন সক্রিয় কর্মী ছিলেন। তিনি বন্ধু নাট্য সংস্থা’ ও ‘ক্রান্তি শিল্পীগােষ্ঠীর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। কবি জসীমউদ্দীনের সাহিত্য সাধনা সংঘ’ ও ‘সাংস্কৃতিক স্বাধিকার সংরক্ষণ কমিটি’ ও অন্যান্য সাংস্কৃতিক আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন জহিরুল। শেষ দিকে তিনি উন্মেষ’ নামে একটি সাংস্কৃতিক সংগঠন গড়ে তােলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন এবং মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত তিনি ছিলেন এ সংগঠনের সভাপতি। জহিরুল ইসলামের প্রকাশিত উপন্যাসগুলাে হলাে : ‘অজ গাঁয়ের বেগম, ‘ব্রীজের তলায় থাকি’, অন্য নায়ক’, ‘মেয়েরা পর্দানশীন’, ‘সূর্যমুখী’ ও ‘অগ্নিসাক্ষী। এছাড়া বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় তার অনেক গল্প ও প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। ১৯৭১ সালের ২ এপ্রিল ভােরে বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে জিঞ্জিরায় পাকবাহিনীর আক্রমণের সময় চুনকুটিয়া গ্রাম থেকে তিনি নিখোঁজ হন। শহীদ জহিরুল ইসলামের স্ত্রীর নাম নাঈমা জহির। জহিরুলের মৃত্যুর এক মাস তিন দিন পর তাদের একমাত্র মেয়ে সৈয়দা জারকা জহিরের জন্ম হয়।

সূত্র : শহীদ বুদ্ধিজীবী কোষ –  আলী মাে. আবু নাঈম, ফাহিমা কানিজ লাভা

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!