You dont have javascript enabled! Please enable it!
গােলাম মােস্তফা
গােলাম মােস্তফা ছিলেন ঠাকুরগাঁও জেলার পীরগঞ্জ কলেজের উপাধ্যক্ষ। তিনি ১৯৩৯ সালের ২৬ নভেম্বর জন্ম নেন। তার বাবার নাম ফজলুল করিম। পীরগঞ্জ উপজেলা সদরেই তাদের বাড়ি ছিল। জানা গেছে, ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল দুপুরের দিকে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী কয়েকটি জিপে করে এসে পীরগঞ্জ আক্রমণ করে। প্রথমেই তারা তকালীন পীরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ডা. সুজাউদ্দীন আহাম্মেদের পূর্ব চৌরাস্তার ওষুধের দোকানে হানা দেয়। তাকে মারপিট করে গাড়িতে তােলে এবং দোকান জ্বালিয়ে দেয়। এরপর পাকসেনারা পূর্ব চৌরাস্তার পাশ থেকে অধ্যাপক গােলাম মােস্তফাকে ধরে নিয়ে যায়। গােলাম মােস্তফা মুক্তি সংগ্রাম কমিটি গঠন করে তার নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন। পরে পাকসেনারা পীরগঞ্জ শহরের বিভিন্ন স্থানে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং জব্বার মহাজনসহ বেশ কয়েকজনকে ধরে নিয়ে যায়। ১৭ এপ্রিল পীরগঞ্জ-ঠাকুরগাঁও সড়কের লােহাগাড়ার পাশের জামালপুর (ভাতারমারি) ফার্ম এলাকায় গােলাম মােস্তফাসহ অন্যদের বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে হত্যার পর লাশ ফেলে রেখে যায় পাকসেনারা।
এলাকাবাসী অধ্যাপক গােলাম মােস্তফার দেহাবশেষ নিয়ে এসে পীরগঞ্জ পৌর শহরের রঘুনাথপুরে রেলক্রসিংয়ের পূর্ব দিকে সমাহিত করে। ১৭ এপ্রিল পীরগঞ্জ গণহত্যা দিবস হিসাবে পালন করা হয়। বাংলাদেশ ডাক বিভাগ ‘শহীদ বুদ্ধিজীবী’ হিসাবে ১৯৯৩ সালে অধ্যাপক গােলাম মােস্তফার নামে স্মারক ডাকটিকিট বের করে। ২০০৯ সালে ঠাকুরগাঁও সাংবাদিক ফোরাম তাকে আনুষ্ঠানিক সম্মাননা দেয়। এ শহীদের নামে সড়কসহ পাঠাগার নির্মাণ হয়েছে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায়। এক সংবাদমাধ্যমের কাছে। দেওয়া সাক্ষাৎকারে শহীদ গােলাম মােস্তফার ছেলে অধ্যাপক আসাদুজ্জামান আসাদ ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, সারা জীবন তারা বঞ্চিতই থেকে গেছেন। শহীদ সন্তান হিসাবে কোথাও কোনাে সহায়তা পাননি। তাই শহীদ সন্তান হিসাবে তারা রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি চান। সেই সাথে তিনি শহীদ গােলাম মােস্তফার কবরটি যেন রাষ্ট্রীয়ভাবে সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়, সে দাবি জানান। (বাংলা নিউজ, ১০ ডিসেম্বর ২০১১)। শহীদ গােলাম মােস্তফার স্ত্রীর নাম আনােয়ারা মােস্তফা।

সূত্র : শহীদ বুদ্ধিজীবী কোষ –  আলী মাে. আবু নাঈম, ফাহিমা কানিজ লাভা

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!