You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.04.06 | পঃ বঃ যুব সংঘ ও ছাত্র ফেডারেশনের বাঙলাদেশের প্রতি সংহতি জ্ঞাপন | কালান্তর - সংগ্রামের নোটবুক

পঃ বঃ যুব সংঘ ও ছাত্র ফেডারেশনের বাঙলাদেশের প্রতি সংহতি জ্ঞাপন
(স্টাফ রিপাের্টার)

কলকাতা, ৪ এপ্রিল— পশ্চিমবঙ্গ যুবসংঘ ও বঙ্গীয় প্রাদেশিক ছাত্র ফেডারেশনের ডাকে সহস্র সহস্র তরুণতরুণী এক বিরাট মিছিলে সমবেত হয়ে যশাের সীমান্তে গিয়ে বাঙলাদেশের সংগ্রামরত মানুষের প্রতি সংহতি জানান। মিছিলে অংশগ্রহনকারী দুইজন তরুণী সীমান্তের বাঙলাদেশের মুক্তিযােদ্ধাদের নিজেদের রক্ত দিয়ে রক্ততিলক পরিয়ে দেন। যুবসংঘ ও ছাত্র ফেডারেশন কর্মীগণ মুক্তিযােদ্ধাদের প্রতি সংহতি জানিয়ে তাদের ঔষধ ইতাদি সাহায্য করেন।
পশ্চিমবঙ্গ যুবসংঘ ও ছাত্র ফেডারেশনের ডাকে এই মিছিলে যােগ দেওয়ার জন্য খড়গপুর, তমলুক থেকে শুরু করে দুর্গাপুর, কলকাতা, গুহলী, হাওড়া ও ২৪ পরগণা জেলার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে তরুণ তরুণীগণ ভােরে শিয়ালদহ স্টেশনে সমবেত হন। এবং সেখান থেকে বনগাঁ পর্যন্ত ট্রেনে গিয়ে কয়েক মাইল হেটে তারা বিভিন্ন শ্লোগান দিতে দিতে যশাের সীমান্তে যান।
২ মিছিলে গণসংস্কৃতি সম্মের শিল্পীরাও যােগ দেন। এই শিল্পীরা দেশাত্মবােধক সঙ্গীত গেয়ে মিছিলে অংশ নেন। মুক্তিবাহিনীর সৈনিকরা যুবসংঘ ছাত্র ফেডারেশনের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে সাক্ষাতে এই সংহতি জ্ঞাপনের জন্য ধন্যবাদ জানান।

যুবসংঘ দপ্তরে মুক্তিবাহিনীর সৈনিকদের জন্য রক্ত সংগ্রহ চলছে
যুবসংঘ দপ্তরে গত ২ দিন যাবৎ বাঙলাদেশের সংগ্রামরত মানুষের জন্য রক্ত সংগ্রহ করা হচ্ছে। আজ এই রক্ত সংগ্রহ বন্ধ থাকলেও সােমবার বেলা ১টা থেকে যথারীতি এই রক্ত সংগ্রহ চলবে। রায়গঞ্জে হরতাল পশ্চিম দিনাজপুর জেলার রায়গঞ্জ ৩১ মার্চ বাঙলা বন্ধ এর সমর্থনে সম্পূর্ণ সফল হরতাল পালিত হয়। বাঙলাদেশের সংগ্রামী মানুষদের প্রতি পেট্রলিয়াম কর্মীদের সমর্থন।
পেট্রলিয়াম ওয়ার্কাস ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক শ্রীসুনীল চক্রবর্তী আজ এক বিবৃতিতে রাজ্যের জনগণকে বিশেষ করে পেট্রল কর্মীদের বাঙলাদেশের সংগ্রামী মানুষদের অর্থ, খাদ্য, ঔষধ, রক্ত দান করার জন্য আবেদন জানিয়েছেন। শ্রীচক্রবর্তী বাঙলাদেশের মানুষের উপর।
ইয়াহিয়া সৈনদের বর্বর আক্রমণ এর তীব্র নিন্দা করে অবিলম্বে এই আক্রমণ বন্ধ করার এবং বাঙলাদেশের সরকারকে স্বীকৃতি দানের দাবি জানান।

বাঙলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সমর্থনে হরতাল
বাঙলাদেশে স্বাধীকার রক্ষার সংগ্রামের সমর্থনে গত ৩১ মার্চ হাসনাবাদে হরতাল পালিত হয়। পরে শ্রীসামসুল হকের সভাপতিত্বে এক বিশাল জনসভার বাঙলাদেশে পশ্চিম পাকিস্তানের সামরিক চক্রের অমানুষিক গণহত্যার বিরুদ্ধে তীব্র ধিক্কার ধ্বনি উচ্চারিত হয়। সভা বক্তৃতা করেন কমিউনিস্ট নেতা শ্রীকমল হালদার, নীলরতন পাছাল, গােপালচন্দ্র ঘােষ, সনাতন দাস, কৃষ্ণপদ দাস, কৃষ্ণপদ মণ্ডল প্রমুখ। সভা থেকে একটি সংগ্রাম সমিতিও গঠন কর হয়।
সন্দেশখালি থানাতেও কমিউনিস্ট পার্টির উদ্যোগে ঐ দিন হরতাল পালন করা হয় এবং বিকেলে খুলনা হাই স্কুল প্রাঙ্গনে এক জনসভা অনুষ্ঠিত হয়, সর্বশ্রী বিনােদ গায়েন, গােপাল মণ্ডল, সুনীল মৃধা, ভূপতি ভূষণ মৃধা সামরিক শাসনের নাগপাশ থেকে বাঙলাদেশের মুক্তি সংগ্রামের সমর্থনে ভাষণ দেন। প্রায় দু’হাজার মানুষ ঐ জনসভায় উপস্থিত ছিলেন।

সূত্র: কালান্তর, ৬.৪.১৯৭১