১৯৬৯ এর গনঅভ্যুত্থান
সরকার পক্ষঃ প্রেসিডেন্ট আইউব খান, চিফ মিনিস্টার মোনেম খান, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ভাইস এডমিরাল এআর খান, জিওসি মেজর জেনারেল মুজাফফর আহমেদ, আইজি অজ্ঞাত, ডিসি এমকে আনোয়ার। দল কনভেনশন মুসলিম লীগ।
আন্দোলনকারীঃ ডেমোক্রেটিক একশন কমিটি ( পিডিএম, আওয়ামী লীগ নস্রুল্লাহ, জামাত, নেজামে ইসলাম, কাউন্সিল মুসলিম লীগ ), স্টুডেন্ট একশন কমিটি, আওয়ামী লীগ(৬ দফা), ন্যাপ ভাসানী ও মোজাফফর, ছাত্রলীগ। আন্দোলনের মুল সংগঠন ছিল ছাত্রলীগ।
৭ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই গনআন্দোলন শেষ হয় শেখ মুজিবের মুক্তি দিয়া। আন্দোলনে সারা দেশে প্রায় ৬০ জন এবং বৃহত্তর ঢাকাতেই ২০ জনের মত নিহত হয়। আহত হয় প্রায় ৩ শতাধিক। গ্রেফতার হয় প্রায় হাজার খানেক। আন্দোলন দমনে পুলিশ ব্যর্থ হলে ইপিআর নামানো হয়। হতাহতের বেশির ভাগই নিহত হয় ইপিআর এর গুলিতে। শেষ অবধি সেনা নামানো হয়। সেনা সদরের নির্দেশে সেনা বাহিনী নিস্ক্রিয় থাকে। ক্ষমতা টিকাইয়া রাখতে আইউব গোল টেবিল বৈঠক ডাকেন। আওয়ামী লীগ পিপিপি এর অনমনীয় মনোভাবের কারনে গোল টেবিল বৈঠক ব্যর্থ হয় ফলে আইউব সরকারের পতন হয়। ইয়াহিয়ার কুটচাল সঠিক ভাবে পালন করায় জিওসি মুজাফফর আহমেদ গভর্নর পদে নিযুক্তি লাভ করেন। ইয়াহিয়াকে সন্তোষট করায় ডিসি পদে এমকে আনোয়ার বহাল থাকেন। জরুরী অবস্থা বহাল থাকা সত্ত্বেও ডিসি ১৪৪ ধারা, কারফিউ, ডিটেনশন, গনগ্রেফতার প্রয়োগ করেও এ আন্দোলন থামাইতে পারেন নাই। এই আন্দোলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়র ভিসি হিসাবে ওসমান গনি ভাল ভুমিকা রাখেন। আন্দোলনের ফলে তাজউদ্দীন, মনি সিং সহ প্রায় শতাধিক শীর্ষ নেতা এবং কয়েক হাজার রাজবন্দী মুক্তি লাভ করেন। প্রদেশে সাংস্কৃতিক একটি বিপ্লব দেখা দেয়। সিনেমা হলে উর্দু সিনেমা প্রদর্শন কমে যায়। রেডিও টেলিভিশনে বাংলা অনুষ্ঠান প্রচারের প্রাধান্য দেখা যায়। অন্যান্য রাজনৈতিক দল সমুহ অবলুপ্তির দিকে ধাবিত হয়। জনগনের মধ্যে জাতীয়তাবাদী চেতনা প্রসার লাভ করে। মৌলবাদী রাজনীতি দুর্বল হয়ে যায়। পশ্চিম পাকিস্তানীরা এদেশে তাদের কার্যক্রম সীমিত করে ফেলে। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা যাহা প্রায় শেষ পর্যায়ে ছিল তাহা প্রত্যাহার হয়। ৪ বছর ধরে চালু জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার হয়। ৬৪ থেকে ৭০ কোন রাজনৈতিক দল শহীদ মিনারে পুস্প স্তবক অর্পণ করেছে এমন সংবাদ বা চিত্র কোন পত্রিকায় দেখা যায় নি। তখন ছাত্র সংগঠন গুলি এ দায়িত্ব পালন করত। রাজনৈতিক দল গুলি আলোচনা সভা করত। ছবিতে শহীদ মিনারে ছাত্র ইউনিয়নের পুস্প স্তবক ২১ ফেব্রুয়ারী ১৯৬৪।