চীন নীতি না বদলালে ইয়াহিয়া-মাও এর নাম এক সারিতে লেখা থাকবে
কলকাতা জণাকীর্ণ সমাবেশে “আগ্নিকন্যা” মতিয়া চৌধুরী
(স্টাফ রিপাের্টার),
কলকাতা, ১৪ সেপ্টেম্বর বাঙলাদেশের “অগ্নিকন্যা” ন্যাপ নেত্রী মতিয়া চৌধুরী আজ এখানে বলেছেন, “অভিজ্ঞতার দর্পনে বাঙলাদেশের মানুষ আজ তার বন্ধু ও শত্রুদের চিনে নিয়েছেন। লাখাে নরনারীর আত্মাহুতিতে একদিকে যেমন ভারতের সঙ্গে আমরা চিরস্থায়ী বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছি, তেমনি বাঙলাদেশের মাটিতে নখর ভােতা হয়ে গেছে চিরকালের জন্য। আমরা বুঝেছি সােভিয়েত ইউনিয়নসহ বিশ্বের সকল গণতান্ত্রিক শক্তি আমাদের বন্ধু, জঘন্যতম গণহত্যা সংঘটিত হয়েছে যে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের কৃপায় সে আমাদের চিরশত্রু। ভিয়েতনাম, এঙ্গোলা মােজামবিকের লড়াইয়ের সঙ্গে আমাদের সগ্রাম অভিন্ন দুঃখের সঙ্গে প্রত্যক্ষ করেছি সমাজতন্ত্রের দাবিদার চীনের ভূমিকা। আশা করব, চীন তার নীতি বদলাবে। যদি তা না বদলায় তবে বাঙলাদেশের মুক্তি সংগ্রামের ইতিহাসে ইয়াহিয়া আর মাও-সে-তুং এর নাম লেখা থাকবে একই সারিতে।” মতিয়া চৌধুরী আজ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আশুতােষ হলে (কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় জাতীয় সংহতি সমিতির উদ্যোগে) বাঙলাদেশের পটভূমিতে আয়ােজিত ফ্যাসিবাদী সামরিক একনায়কত্বের বিরুদ্ধে সারা ভারত ছাত্র শিক্ষক কনভেনশনের সমাপ্তি অধিবেশনে জনাকীর্ণ সমাবেশে ভাষণ দিচ্ছিলেন। বাঙলাদেশের তথা সমগ্র পাকিস্তানের মানুষ গণতন্ত্র, স্বায়ত্ত শাসন ও জাতিগত অধিকারের দাবিতে যখনই আন্দোলনে সামিল হয়েছেন তখনই ইসলাম বিপন্ন ‘ভারতীয় আক্রমণের বিপদ কাশ্মীর প্রশ্ন’ এর জিগির তুলে বা সাম্প্রদায়িক দাঙ্গাকে পেটেন্ট দাওয়াই’ হিসেবে ব্যবহার করে শাসকশ্রেণি আন্দোলন ধ্বংস করেছে। মতিয়া চৌধুরী প্রত্যয়ের সঙ্গে বলেন, “এখন পরিস্থিতি ভিন্ন। ওরা ভেবেছিল ৪৮ ঘন্টার মধ্যে বাঙালীকে ঠান্ডা করা যাবে। ৬ মাস হয়ে গেছে আজও বাঙালীকে দমন করা যায় নি। আজ শুধু বাংলাদেশ নয় সমগ্র পাকিস্তানের নিপীড়িত মানুষ লড়াই শুরু করেছেন। তাই তা পাঠান বেলুচরা এখন গেরিলা ট্রেনিং নিচ্ছেন।
সূত্র: কালান্তর, ১৪.৯.১৯৭১