আব্দুন নূর
আব্দুন নূর ১৯২১ সালের ৯ নভেম্বর মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার দৌলতপুরে জন্ম নেন। তার বাবার নাম মাে, খােরশেদ আলী ও মায়ের নাম বশিরুন নেছা। এক ভাই ও দুই বােনের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার বড়।। ম্যাট্রিক পাস করার পর আব্দুন নূর এল, এম. এফ. ডিগ্রি নেন। প্রথমে তিনি বার্মা অয়েল কোম্পানিতে মেডিকেল অফিসার হিসাবে চাকরি করেন। পাঁচ বছর পর চাকরিতে ইস্তফা দিয়ে তিনি নিজের এলাকায় চলে আসেন ও চিকিৎসা পেশার চর্চা শুরু করেন। | আব্দুন নূর ভাষা আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন। আইয়ুববিরােধী গণআন্দোলনের সময় তিনি কারাবরণ করেছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি একজন সংগঠকের ভূমিকা পালন করেন। মুক্তিযােদ্ধাদের তিনি আশ্রয় দিয়েছেন ও চিকিৎসা করেছেন। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক দেওয়ান ফরিদ গাজীকে লেখা তার একটি চিঠি স্থানীয় রাজাকারদের হাতে পড়ে। এই চিঠির সূত্র ধরে চারজন রাজাকারসহ পাকিস্তানি সেনারা তাঁর বাড়িতে হানা দেয়। হানাদারদের গুলিতে ডা. আব্দুন নূরের দুই ছেলে শামীম ও শাহীন আহত হয়। আব্দুন নূরকে গ্রেফতার করা হয়। তাকে গ্রেফতার করে প্রথমে দৌলতপুর বাজারে পাকসেনাদের ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় বড়লেখায়। জিজ্ঞাসাবাদের নামে তার ওপর চালানাে হয় নির্মম নির্যাতন। এরপর ১৯৭১ সালের ২০ জুলাই তাকে শাহবাজপুর পাকসেনা ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই শাহবাজপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের পশ্চিম পাশে তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। স্বাধীনতার পর আব্দুন। নূরের লাশ শাহবাজপুর থেকে তুলে এনে পারিবারিক কবরস্থানে সমাহিত করা হয়। শহীদ ডা. আব্দুন নূরের স্ত্রীর নাম শামছুন নাহার বেগম। তাদের সংসারে তিন ছেলে ও দুই মেয়ে ছিল।
সূত্র : শহীদ বুদ্ধিজীবী কোষ- আলী মো. আবু নাঈম , ফাহিমা কানিজ লাভা