আবু সালেহ মােহাম্মদ এরশাদউল্লাহ
আবু সালেহ মােহাম্মদ এরশাদউল্লাহ ঢাকার সন্তান। তার ডাকনাম ছিল “মিলু’। ছাত্র হিসাবে মেধাবী এরশাদউল্লাহ ম্যাট্রিক ও আই, এসসি.-তে প্রথম বিভাগে পাস করেন। ইঞ্জিনিয়ারিং ফাইনাল পরীক্ষার আগে তার অ্যাপেন্ডিসাইটিস অপারেশন হয়। পরীক্ষা ভালােভাবে দিতে পারেননি বলে তিনি দ্বিতীয় শ্রেণি পান। ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করার পর তিনি ওয়াপদার হাউজিং অ্যান্ড সেটেলমেন্ট বিভাগে যােগ দেন। সুদর্শন এরশাদউল্লাহ ছিলেন নরম স্বভাবের মানুষ। তিনি ভালাে গিটার বাজাতেন। গিটার বাজানােতে তিনি পুরস্কারও পেয়েছিলেন। ১৯৭১ সালে এরশাদউল্লাহ থাকতেন ঢাকার মােহাম্মদপুরে, শ্বশুরবাড়িতে। ২৮ এপ্রিল সকালে রাজশাহী যাওয়ার উদ্দেশে তিনি বাসে উঠেছিলেন। তাদের বাসটি মিরপুর বাঙলা কলেজের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় ওখানকার অবাঙালিরা। বাসটিতে আক্রমণ করে। তারপর এরশাদউল্লাহর কোনাে খবর পাওয়া যায়নি। তার লাশও পাওয়া যায়নি। স্বাধীনতার পর মিরপুর বাঙলা কলেজের সামনের সড়কের নাম ‘শহীদ এরশাদউল্লাহ সড়ক’ রাখা হয়েছিল। কিন্তু কালের আড়ালে তা হারিয়ে গেছে।
আবু হেনা শামসুদ্দোহা
আবু হেনা শামসুদ্দোহার জন্ম ১৯৪৫ সালে, কিশােরগঞ্জ জেলার গুমদী গ্রামে। তার বাবার নাম মােহাম্মদ আলী।
আবু হেনা শামসুদ্দোহা নিহত হওয়ার আগে পর্যন্ত কিশােরগঞ্জ জেলার হােসেনপুরে মাধখলা সিনিয়র মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করতেন। এরও আগে তিনি গােবিন্দপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন। তিনি ‘সুখ দুঃখ’ ও ‘সখিনার সংসার নামে দুটো গল্পগ্রন্থ রচনা করেছিলেন। নিজ এলাকায় বিভিন্ন সংস্কারমূলক কাজের জন্য তিনি সি, ও. (উন্নয়ন) পুরস্কার লাভ করেন।
স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালে তিনি দেশাত্মবােধক ছড়া, গান ইত্যাদি প্রচার করতেন। স্বাধীনতাবিরােধীদের কাজে বাধা দেওয়ায় ১৯৭১ সালের ৪ নভেম্বর ময়মনসিংহের নান্দাইলে আবু হেনা শামসুদ্দোহাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। তিনি এক মেয়ে। সন্তানের জনক ছিলেন।