আবদুল গফুর আহমদ
আবদুল গফুর আহমদ জন্মেছিলেন ১৯১৯ সালের ৩ জানুয়ারি। কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারীর খরখরিয়ায়। তার বাবার নাম হাফিজউদ্দিন আহমেদ এবং মায়ের নাম ছমিরন নেসা। দুই ভাই ও চার বােনের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার বড়। আবদুল গফুর আহমদ স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ থেকে এম, বি, বি, এস, পাস করেন। এরপর তিনি রেলওয়েতে সার্জন হিসাবে যােগ দেন। ডা. আবদুল গফুর ঢাকা, চট্টগ্রাম, লালমনিরহাট, বােনারপাড়া ও পার্বতীপুর রেলওয়ে হাসপাতালে এবং সেতাবগঞ্জ ডিসপেন্সারিতে কাজ করেছেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় ডা. আবদুল গফুর আহমদ পার্বতীপুর রেলওয়ে হাসপাতালে কর্মরত ছিলেন। ওই এলাকাটি ছিল অবাঙালি অধ্যুষিত। তারা বাঙালিদের ওপর হামলা করতে শুরু করে। এ অবস্থায় রেলওয়েরই একজন অবাঙালি ওয়েলফেয়ার ইন্সপেক্টর তাকে আশ্রয় দেন। কিন্তু প্রতিবেশী অবাঙালিদের লাগাতার চাপের মুখে তিনি ভয় পেয়ে যান। বিপদ বুঝতে পেরে ওয়েলফেয়ার ইনসপেক্টর স্থানীয় সংসদ সদস্য কামরুজ্জামনের সহায়তা চান। কামরুজ্জামান অবাঙালি হলেও ডা. আবদুল গফুর আহমদের প্রতি সহৃদয় ছিলেন। তিনি তার বাসায় ডা. আবদুল গফুর আহমদ। ও ডা. মতিয়ুর রহমানকে আশ্রয় দেন। ১৯৭১ সালের ১০ মে, কামরুজ্জামানের অনুপস্থিতিতে ছােট ছেলে স্থানীয় অবাঙালিদের নিয়ে এসে ডা. আবদুল গফুর ও ভা, মতিয়ুরকে ধরে নিয়ে যায়। শােনা যায়, হত্যা করার পর তাদের মরদেহ রেল ইঞ্জিনের বয়লারে ফেলে পুড়িয়ে ছাই করে দেওয়া হয়। ১৯৭১ সালের ১৩ জুন তারিখে পাক হানাদার বাহিনীর হাতে তিনি নিহত হন। তিনি বিবাহিত ছিলেন।
সূত্র : শহীদ বুদ্ধিজীবী কোষ- আলী মো. আবু নাঈম , ফাহিমা কানিজ লাভা