আবদুর রউফ সরদার
কুড়িগ্রাম জেলার বজরা গ্রামে বাংলা ১৩৪৪ সনের ৪ কার্তিক (১৯৩৭ সালের। অক্টোবর মাসে) রবিবার আবদুর রউফ সরদারের জন্ম। তাঁর বাবার নাম মাে, আবদুল লতিফ সরদার। আবদুর রউফ অর্থনীতিতে বি. এ. (অনার্স) ও এম, এ, পাস করেন। শিক্ষাজীবন শেষে প্রথমে কুড়িগ্রাম মহাবিদ্যালয়ে অধ্যাপনা শুরু করেন। পরে পাকিস্তান পরিসংখ্যান ব্যুরাের সহ-পরিচালক, পূর্ব পাকিস্তান শিল্প উন্নয়ন কর্পোরেশনের (ই. পি. আই. ডি. সি.) সহ-পরিচালক এবং ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বা নিপাতে পরিচালক হিসাবে কাজ করেছেন। কলেজ শিক্ষার্থীদের জন্য রচিত তার অর্থনীতি বিষয়ক বই ‘লাঙ্গল যার মাটি তার সুস্পষ্টভাবেই বামপন্থি চিন্তার দ্বারা প্রভাবিত। এছাড়া তিনি পাকিস্তান। অবজারভার পত্রিকায় সম্পাদকীয় কলাম লিখতেন। ১৯৭১ সালের ৮ ডিসেম্বর রায়ের বাজারের নিজ বাসভবন থেকে আলবদর। বাহিনী তাকে ধরে নিয়ে যায়। ওই দিনই তিনি নিহত হন। তিনি স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক মেয়ে রেখে যান।
আবদুর রহমান
আবদুর রহমানের জন্ম কুড়িগ্রাম জেলার নাগেশ্বরী উপজেলার বাগডাঙ্গা গ্রামে, ১৯৪৫ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি। তার বাবার নাম বাদশা মণ্ডল। আবদুর রহমান নাগেশ্বরীর দয়াময়ী একাডেমি থেকে ১৯৬১ সালে ম্যাট্রিক পাস। করেন। ১৯৬৩ সালে কারমাইকেল কলেজ থেকে তিনি আই. এসসি. পাস করেন। এরপর তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে রসায়ন বিভাগে ভর্তি হন এবং সেখান থেকে ১৯৬৬ সালে দ্বিতীয় শ্রেণিতে প্রথম স্থান নিয়ে রসায়নশাস্ত্রে বি. এসসি, এবং ১৯৬৭ সালে এম, এসসি, ডিগ্রি পান। শিক্ষাজীবন শেষে তিনি রংপুর কারমাইকেল কলেজে প্রভাষক হিসাবে যােগ দেন। শিক্ষকতার পাশাপাশি একজন সমাজসেবক হিসাবেও সক্রিয় ছিলেন আবদুর রহমান। বাঙালির স্বাধীনতা ও স্বাধিকারের পক্ষে তিনি সােচ্চার ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের শুরুতে তিনি স্ত্রী ও সন্তানদের গ্রামে রেখে আবার রংপুরের উদ্দেশে রওনা হন। কিন্তু পথেই তিনি রাজাকার-আলবদরদের চোখে পড়ে যান। সেদিন ছিল ১৯৭১ সালের ২ জুন। রাজাকাররা তাকে ধরে পাকিস্তানিদের হাতে তুলে দেয়। এরপর তার কোনাে খোঁজ পাওয়া যায়নি। শহীদ আবদুর রহমান বিবাহিত ছিলেন। তাঁদের সংসারে তার দুই ছেলে ও এক মেয়ে ছিল। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর তাঁর স্ত্রী শিক্ষকতায় যােগ দেন।
সূত্র : শহীদ বুদ্ধিজীবী কোষ- আলী মো. আবু নাঈম , ফাহিমা কানিজ লাভা