৮ ইস্ট বেঙ্গল ২৫ মার্চ থেকে ১০ জুন ১৯৭১
২৫ মার্চের আগে ৫,৬,৭, ইস্ট বেঙ্গল পাকিস্তানেই ছিল। ৫ বেঙ্গল লে জেনারেল বাহাদুর শের এর ৪ কোরের অধীন ১০ ডিভিশনের ৮৮ ব্রিগেডের অন্তর্ভুক্ত ছিল। ৭ ইস্ট বেঙ্গল টিক্কা খানের ২ কোরের ১৮ ডিভিশনের ৫১ ব্রিগেড ভুক্ত ছিল। ৬ বেঙ্গল যুদ্ধ এলাকার বাইরের কোরে ছিল। ৫ ও ৭ বেঙ্গল পশ্চিম সেক্টরে পরে ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিল। ৮ বেঙ্গল খারিয়ানে যাওয়ার আদেশ প্রাপ্ত হইয়া এক চতুর্থাংশ সৈন্য পাকিস্তানে চলিয়াও গিয়াছিল(zia, 26 march bichitra. ও স্বাধীনতা যুদ্ধের দলিল পত্র ৯ খণ্ড Le mahfuj স্বাধীনতা যুদ্ধের দলিল পত্র ৯ খণ্ড )। অপারেশন সার্চ লাইটের প্ল্যানে ৮ বেঙ্গল যদি আনুগত্য পরিবর্তন করে তখনি কেবল তাদেরকে নিরস্রকরনের জন্য বলা হইয়াছিল(siddik salik, annexure)। পাকিস্তানি করতিপক্ষের ধারনা ছিল ৮ ইস্ট বেঙ্গল তাদের অনুকুলেই আছে। অপরদিকে ১ বেঙ্গলকে চৌগাছায় পাঠাইয়া দেয়া হইয়াছিল এবং অনুগত বাংগালি সিও দিয়া নিরস্রিকরন করার চেষ্টা হইয়াছিল। ৩ বেঙ্গল কে ২৫ মার্চের আগে তাদের সিও এরশাদ কে পরিবর্তন করিয়া নতুন সিও অবাঙ্গালি ফজল আহমেদ নিয়োগ দিয়া ৩ মহকুমা শহরের ৪ ভাগে বিভিন্ন জায়গায় পাঠানো হয়। ২ বেঙ্গল আগেই বিদ্রোহ করার পর অনুগত বাঙালি সিও মাসুদ কে বাদ দিয়া অতি অনুগত বাঙ্গালি রকিব কে নিয়োগ দিয়া টাঙ্গাইল পাঠাইয়া দেয়া হয়। ৪ বেঙ্গলকে ২ ভাগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও শমশের নগর পাঠাইয়া দেয়া হয়। পাকি অনুগত বিবেচনায় কোন রুপ ভাংগাভাঙ্গি ছাড়াই ইনটেকট রাখা হইয়াছিল ৮ বেঙ্গলকে। অপর্যাপ্ত রসদ অজুহাতে ৮ বেঙ্গল কোন প্রতিরোধ করেনি কেবল ১১ এপ্রিলের কালুরঘাট ও ১৭ এপ্রিলের মহালছরি যুদ্ধ ছাড়া। অথচ চট্টগ্রামেই অন্যান্য এলাকার চেয়ে ৩-৪ গুন বাঙালি সৈন্য ছিল। খারিয়ান একটি উন্নতমানের ক্যান্টনমেন্ট। আবহাওয়াও চমৎকার। কোন ইউনিট এখানে বদলি হইলে ইদের আনন্দ বয়ে যায়। এখানেই ছিল নজর হসেন শাহ এর ১৬ ডিভিশন। তাদের ইস্ট পাকিস্তানে আসার আদেশ দেয়া হয়েছিল এবং এরা এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহেই এসে উত্তরবঙ্গে অবস্থান নেয়।
৮ বেঙ্গলের শীর্ষ কম্যান্ডে যারা ছিলেন ১) মেজর জিয়া সেকেন্ড ইন কম্যান্ড ২)মেজর শওকত ৩) ক্যাপ্টেন মহসিন ৪)ক্যাপ্টেন অলি ৫)ক্যাপ্টেন আমিন আহমেদ চৌধুরী ৬)ক্যাপ্টেন খালেকুজ্জামান ৭)ক্যাপ্টেন আজিজ ৮) লে শমশের মুবিন ৮)লে মাহফুজ
মহাল ছড়ি যুদ্ধের পর ৩০ এপ্রিল ওসমানী যুদ্ধক্ষেত্র পরিদর্শন করেন। পরবর্তীতে তিনি ৮ ইস্ট বেঙ্গল কে ১১ নং সেক্টরে বদলি করেন। সেখানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া তে সফল হওয়া মেজর সাফায়েত জামিল কে ৮ বেঙ্গলের নতুন সিও নিয়োগ দেয়া হয়। কিছুদিন পর জিয়াকে মেঘালয়ে আনা হয়। ১ ও ৩ বেঙ্গলকে এখানে আনা হয়। সম্পূর্ণ রেডি অবস্থায় ৩ টি ব্যাটেলিয়নের সমন্বয়ে জেড ফরস গঠন করা হয়। ৮ বেঙ্গল নতুন ভাবে পথচলা শুরু করে। ওদিকে সফিউল্লাহ কে ২ খালেদকে ৪ বেঙ্গল দেয়া হয় সফিউল্লাহ নিজ উদ্যোগে ১১ বেঙ্গল খালেদ নিজ উদ্যোগে ৯ ও ১০ বেঙ্গল বানাইয়া তাদের ব্রিগেড বানাইয়া নেন। জিয়া শুধু ব্রিগেড কমান্ডার আর শফিউল্লাহ খালেদ ব্রিগেড কমান্ডার এবং সেক্টর কম্যান্ডার দুটাই রইলেন। (স্বাধীনতা যুদ্ধের দলিল পত্র ৯ খণ্ড ও সাফায়েত জামিলের রক্তাক্ত ৭১)
যে ১১৩৭ জনের পিতাকেই ১৯৭৭ সালে জিয়া ফাঁসিতে বা ফায়ারিং স্কোয়াডে মেরেছিলেন
জিয়ার আমলে সপ্তম অষ্টম শ্রেণিতে আরবি ও ইসলাম ধর্ম বাধ্যতামূলক ছিল কিন্তু নবম দশম শ্রেণীতে আরবি ছিলনা ইসলাম ধর্ম ঐচ্ছিক ছিল। আরবিতে কোনদিন পাশ করি নাই বলে সি সেকশনের ছাত্র ছিলাম। ইসলাম ধর্মের হাদিস গুলি পরীক্ষার প্রশ্নে আরবিতে লেখা থাকতো তার বাংলা অনুবাদ করতে হত। ২ বছর আরবি পরে শিখেছিলাম হাজা কিতাবুন (ইহা একটি বই)। জিয়ার বদান্যতায় ইসলামের পরিবর্তে যে বিষয়টি পরেছিলাম তা মাষ্টার ডিগ্রি পর্যন্ত সফল ফলাফল নিয়েই পড়েছিলাম। মারা যাওয়ার বছর খানেক আগে জিয়া নিকটবর্তী সেই স্খুলে এসেছিলেন। সবাই হাত বাড়িয়ে দিলে তিনি তার হাতটি স্থির ভাবে রাখলেন। ছেলেরা হুড়মুড় করে সেই স্থির হাত স্পর্শ করতে লাগল। আমি দেখলাম উনি শিশুদের দিকে নয় জঙ্গলের দিকে তাকিয়েছিলেন। এই স্খুলের ছাত্রদের(তখন সাবেক) ১১৩৭ জনের পিতাকেই ১৯৭৭ সালে জিয়া ফাঁসিতে বা ফায়ারিং স্কোয়াডে মেরেছিলেন।