আতাউর রহমান
আতাউর রহমান ছিলেন পাকিস্তান রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলীয় শাখার সদর দফতর চট্টগ্রামের প্রচার ও জনসংযােগ কর্মকর্তা। কর্মজীবনের শুরুতে তিনি কিছুদিন সাংবাদিকতা করেছেন, পরে রেলওয়েতে যােগ দেন। তার সাথে সাংবাদিক জগতের অনেকের যােগাযােগ ছিল। এছাড়া পেশাগত কারণেই তিনি চট্টগ্রামের নির্বাচিত সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগ নেতা এম. আর. সিদ্দিকীর সাথে যােগাযােগ রাখতেন। ৩ মার্চ চট্টগ্রাম পাহাড়তলীর রেল কলােনিতে পাকিস্তানিদের প্ররােচনায় অবাঙালিরা বাঙালিদের ওপর হামলা চালায়। বাঙালিরা পাল্টা হামলা চালালে সংঘাত ছড়িয়ে পড়ে। ওই হামলায় আহত ক্ষতিগ্রস্তদের চিকিৎসা ও সহযােগিতার কাজে ভূমিকা রেখেছিলেন আতাউর রহমান। আতাউর বাস করতেন চট্টগ্রাম লেডিজ ক্লাবের উল্টোদিকের পাহাড়ের রেল কলােনির বাসায়।
২৬ মার্চ সকালে ক্যাপ্টেন রফিক তার ই. পি, আর, সদস্যদের নিয়ে এজেন্ট পাহাড়ের রেল কলােনির কয়েকটি ফ্ল্যাটে আশ্রয় নেন। আতাউর ক্যাপ্টেন রফিকের সাথে দেখা করে তাদের কীভাবে সহযােগিতা করা যায়, সে পরামর্শ করেন। লালখান বাজারের মােড়ে বড় বটগাছ কেটে রাস্তায় ব্যারিকেড দেওয়ার কাজেও তিনি অংশ নেন। ২৬ মার্চ রাত ১০টা থেকে ১১টার মধ্যে পাকিস্তান সেনাবাহিনী ক্যাপ্টেন রফিকের বাহিনীর অবস্থানের ওপর হামলা চালায়। প্রচণ্ড আক্রমণ মােকাবেলা করতে না পেরে ক্যাপ্টেন রফিক তার বাহিনী নিয়ে সরে যেতে বাধ্য হন। আতাউর তাঁর পরিবারের সদস্যদের নিয়ে চট্টগ্রাম হাসপাতালে আশ্রয় নেন। পরে তিনি হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে চট্টগ্রাম শহরে গিয়ে আশ্রয় নেন। ১২ এপ্রিল রেলের কর্মকর্তাদের চাকরিতে যােগ দেওয়ার আদেশ জানানাে হলে আতাউর কাজে যােগ দেন। ২৩ এপ্রিল রেল অফিসে পাকবাহিনী হানা দেয়, ধরে নিয়ে যায় রেলের প্রধান কর্মকর্তা শফি আহমেদকে, ২৬ তারিখ ধরে নিয়ে যায়। জালাল আহমদকে। ২৭ এপ্রিল পাকবাহিনী ধরে নিয়ে যায় আতাউর রহমানকে। শহীদ আতাউর রহমান বিবাহিত ছিলেন।
সূত্র : শহীদ বুদ্ধিজীবী কোষ- আলী মো. আবু নাঈম , ফাহিমা কানিজ লাভা