আ, খ, ম, গােলাম মােস্তফা
আ. খ. ম. গােলাম মােস্তফার জন্ম ১৯৩৬ সালের ৫ এপ্রিল, কুমিল্লা জেলার লাকসাম উপজেলার মিছির গ্রামে। তার বাবার নাম মৌলভী আজিজুর রহমান, মায়ের নাম সুফিয়া খাতুন। পাচ ভাই ও চার বােনের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার বড়। তার পারিবারিক নাম আবুল খায়ের মােহাম্মদ গােলাম মােস্তফা, ডাকনাম ‘বাচ্চু। গােলাম মােস্তফা লাকসামের হরিশ্চর হাই স্কুল থেকে ১৯৫৪ সালে ম্যাট্রিক পাস করেন। এরপর চট্টগ্রাম মেডিকেল স্কুল থেকে তিনি এল, এম. এফ. পাস করেন। তিনি সাব-অ্যাসিস্টেন্ট সার্জন হিসাবে ১৯৫৯ থেকে ১৯৬৪ সাল পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার শাহবাজপুর রুরাল ডিসপেন্সারিতে এবং ১৯৬৪ থেকে ১৯৬৬ সাল। পর্যন্ত গঙ্গাসাগরের মােগরা রুরাল ডিসপেন্সারিতে কাজ করেন। এরপর ১৯৬৬ সালে তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে সাব-ডিভিশনাল মেডিকেল অফিসার হিসাবে যােগ দেন এবং ১৯৬৮ সালে বদলি হন চট্টগ্রাম ডিরেক্টর অফিসে। এরই মধ্যে তিনি ঢাকার মিটফোর্ড মেডিকেল কলেজে এম, বি, বি, এস, কোর্সে ভর্তি হন। আ. খ. ম. গােলাম মােস্তফা ছিলেন বহু গুণের অধিকারী। তিনি ছবি আঁকা, সেতার বাজানাে এবং সঙ্গীতে পারদর্শী ছিলেন। ১৯৭১ সালে তিনি ছিলেন এম. বি বি. এস, শেষ বর্ষের ছাত্র। মার্চ মাসে অসহযােগ শুরু হলে তিনি চট্টগ্রামের লালখান বাজারের বাসায় পরিবারের সদস্যদের কাছে ফিরে যান। ২৯ মার্চ পাকিস্তানি সেনাবাহিনী চট্টগ্রাম পুলিশ লাইন্সে হামলা চালায় এবং পুলিশ লাইন্স দখল করে নেয়। পুলিশ সদস্যদের সহযােগিতা করার কারণে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী লালখান। বাজার এলাকার সব বাসাবাড়িতে পানি সরবরাহ বন্ধ করে দেয়। ৩০ মার্চ সকাল ৭টার দিকে বাড়ির জন্য পানি আনতে তিনি তার ভায়রা কাজী আলী ইমাম ও আরও কয়েকজনকে নিয়ে হাইলেভেল রােডের মুখে যান। সেখানেই পাকিস্তানি সেনাদের গুলিতে আ, খ, ম, গােলাম মােস্তফা এবং কাজী আলী ইমাম শহীদ হন। তাদের দুজনকে রাতের অন্ধকারে বাড়ির বাগানে কবর দেওয়া হয়। শাশুড়ির সাদা শাড়ি দিয়ে গােলাম মােস্তফার কাফন হয়েছিল। শহীদ ডা, আ, খ, ম. গােলাম মােস্তফার স্ত্রীর নাম রােশেনা বেগম। তাদের সংসারে এক মেয়ে ছিল।
সূত্র : শহীদ বুদ্ধিজীবী কোষ- আলী মো. আবু নাঈম , ফাহিমা কানিজ লাভা