২৪ জানুয়ারী ১৯৭২ঃ টাংগাইলের জনসভায় শেখ মুজিব শেখ মুজিব বলেন
টাংগাইল পার্ক ময়দানে অনুষ্ঠিত জনসভায় শেখ মুজিব বলেন তিনি দেশে গনতন্ত্র ও সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতি চালু করবেন। তিনি বলেন উন্নয়নের স্বার্থে সকল স্তরে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য জনগনের প্রতি আহবান জানান। আইন হাতে তুলে না নেওার জন্যও তিনি সকলের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন বর্বর পাকিস্তানী বাহিনী শুধু গণহত্যা করেই খান্ত হয়নি তারা দেশের অর্থনীতিও ধ্বংস করে গিয়েছে। তারা ৩০ লাখ বাঙ্গালী হত্যা করেছে। তাদের কাউকেই বিনা বিচারে ছেড়ে দেয়া হবে না। তিনি বাংলাদেশের পুনর্গঠনের জন্য তিনি পৃথিবীর যে কোন দেশ থেকে শর্তহীন সাহায্য গ্রহনে প্রস্তুত আছেন। আন্তজার্তিক সম্প্রদায়ের এটি কর্তব্য বাংলাদেশের সাহায্যে এগিয়ে আসা। তিনি বলেন এটি খুব আনন্দের কথা অনেক দেশই সাহায্যের হাত প্রসারিত করছে। নিকট ভবিষ্যতে এ হার আরও বৃদ্ধি পাবে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে সক্রিয় সমর্থনের জন্য তিনি ভারত সভিয়েত ইউনিয়ন, ফ্রান্স, ব্রিটেন এবং অন্যান্য শান্তি প্রিয় দেশের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। শেখ মুজিবের সফর উপলক্ষে টাঙ্গাইলের রাস্তায় সুদৃশ্য তোরণ ব্যানার ফেস্টুন দিয়ে সাজানো হয়। এটি টাঙ্গাইলে স্বাধীনতার পর শেখ মুজিবের প্রথম সফর। তিনি বলেন সংবাদ পত্রের পূর্ণ স্বাধীনতা দেয়া হয়েছে তবে তাদের মনে রাখতে হবে এ স্বাধীনতা মানে যা ইচ্ছা তাই লেখার জন্য নয়। তিনি জনগণকেও নিকট প্রতিবেশী ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্য সহযোগিতা করার আহবান জানান। তিনি বলেন মুক্তিযোদ্ধাদের পুনর্বাসনে পদক্ষেপ গ্রহন করা হচ্ছে তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের জাতীয় মিলিশিয়া বা পুলিশ বাহিনীতে যোগ দেয়ার আহবান জানান। ৩১ জানুয়ারী র মধ্যে অস্র জমা না দিলে তারা আলবদরের মর্যাদায় আসীন হবেন এবং সরকার তাদের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা গ্রহন করবেন। বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়া প্রসঙ্গে বলেন দিক বা নাদিক তাতে কিছু আসে যায় না বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে এটিই বড় কথা।
মওলানা ভাসানী সম্পর্কে শেখ মুজিব বলেন তার অনুরোধেই ভাসানী ভারত থেকে বাংলাদেশে ফিরে এসেছেন। তিনি এখন অসুস্থ অবস্থায় সন্তোষে অবস্থান করছেন। তিনি বলেন তিনি এখনও মওলানা ভাসানীর সহিত সাক্ষাৎ করতে পারেননি তবে তিনি তার সাথে শীঘ্রই সাক্ষাৎ করবেন বলে আশা প্রকাশ করেন। তিনি জনগণকে তার রোগমুক্তির জন্য প্রার্থনা করার আহ্বান জানান। শেখ মুজিব সড়ক পথে টাঙ্গাইল যান এবং পথে সাভার, কালিয়াকৈর ও মির্জাপুরে পথ সভায় বক্তব্য দেন। শেখ মুজিবের এ যাত্রা পথে ১৭ টি ব্রিজ বিধ্বস্ত ছিল। আসার সময় তিনি হেলিকপ্টারে আসেন। সভা স্থলে বিপুল সংখ্যক ভারতীয় সৈন্য ছিল। অনুষ্ঠানে সভিয়েল কন্সাল পোপভ শেখ মুজিবের সঙ্গী হয়েছিলেন।