১৪ জানুয়ারী ১৯৭২ঃ রাষ্ট্রপতি ভবনে জনাকীর্ণ সাংবাদিক সম্মেলনে শেখ মুজিব
প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমান রাষ্ট্রপতি ভবনে দেশী বিদেশী জনাকীর্ণ এক সাংবাদিক সম্মেলনে বলেছেন তিনি এক নায়ক নন তিনি গনতন্ত্রে বিশ্বাসী তিনি সমাজতন্ত্র কায়েম করবেন গণতন্ত্রের মাধ্যমেই।
তার সরকার সংবিধান প্রনয়নের কাজ দ্রুততার সাথে করে যাচ্ছেন। সময় নষ্ট না করে শীঘ্রই গণপরিষদের অধিবেশন আহ্বান করা হচ্ছে এবং খসড়া সংবিধান সেখানে পেশ করা হবে। তিনি বলেন সংবিধান অনুমোদন হলে নতুন নির্বাচন দেয়া হবে। নির্বাচনের ফলাফল কি হবে তা আপনারা হয়ত সকলেই জানেন।
ভুট্টো বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দানকারী সকল দেশের সাথে সম্পর্ক ছিন্নের যে হুমকি দিয়েছেন সে প্রসঙ্গে তার মতামত জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন আমি লন্ডনেই বলেছি বাংলাদেশ একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ। এটি টিকে থাকার জন্যই হয়েছে। পাকিস্তানের সাথে যুক্ত থাকার কোন প্রশ্নই আসে না। তিনি আশা করেন ভুট্টো স্বাধীন বাংলাদেশ মেনে নেবেন। একই সাথে চীনও বাংলাদেশের অস্তিত্ব স্বীকার করে নিবে।
পাকিস্তানে আটক সকল বাঙ্গালীকে দ্রুত ফেরত আনার জন্য তার সরকার কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন যোগ্য লোকদের নিয়েই পরিকল্পনা কমিশন গঠন করা হয়েছে তারা দেশ পুনর্গঠনের একটি ব্লু প্রিন্ট তৈরি করছেন।
তিনি বলেন যারা পাকবাহিনীর দোসর ছিলেন তাদের বিচারের আওতায় নেয়া হবে।
তিনি আরও বলেন ৯ মাসের সংগ্রামে ৩০ লাখ বাঙ্গালী শহীদ হয়েছেন।
তিনি বলেন তার দেশ শর্তহীন বিদেশী সাহায্য গ্রহন করবে। বাংলাদেশে আন্তজার্তিক মানবিক সংস্থা সমুহকে কাজ করার আমন্ত্রন জানান।
তিনি মুক্তিযুদ্ধে সকল শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
মুক্তিযুদ্ধে সহায়তাকারী রাষ্ট্র ও বেক্তির প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
দেশে আইন শৃঙ্খলা পুনঃ প্রতিষ্ঠার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন।
বাংলাদেশ সরকার যখন মনে করবে তখনি ভারত সরকার বাংলাদেশ থেকে তাদের সৈন্য প্রত্যাহার করে নিবে।
কিছু দিনের মধ্যেই তিনি কলকাতা সফরে যাবেন।
যুক্ত বাংলা ধারনা তিনি প্রত্যাখ্যান করে বলেন পশ্চিম বাংলা ভারতের অংশ।
সম্মেলনে রবীন্দ্রনাথের উদয়ের পথে শুনি কার বানী কবিতা আবৃত্তি করে বক্তব্য শেষ করেন।