১০ এপ্রিল,১৯৭১ সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ ঘোষণার দিন
বাংলাদেশের গণপরিষদের ক্ষমতা বলে এবং যথাযথভাবে ক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রতিনিধি হিসেবে এ সংক্রান্ত ঘোষণাপত্র পাঠ করেন আওয়ামী লীগ নেতা অধ্যাপক ইউসুফ আলী।
ঘোষণাপত্রে ‘জাতির পিতা’ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ২৬ মার্চ ঘোষিত স্বাধীনতা দৃঢ়ভাবে সমর্থন ও অনুমোদন করা হয়।
৭১’এর ১০ এপ্রিল বাংলাদেশ সরকারের প্রতিষ্ঠা এবং স্বাধীনতার আদেশ ২৬ মার্চ থেকে কার্যকর ঘোষণাকে অন্যতম রাজনৈতিক অগ্রগতি হিসাবে বিবেচনা করা হয়।
ঘোষণাপত্রে দৃঢ়ভাবে ঘোষণা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে বলা হয়, ‘সংবিধান প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রপতি এবং সৈয়দ নজরুল ইসলাম প্রজাতন্ত্রের উপ রাষ্ট্রপতি থাকবেন।’
এতে আরো বলা হয়, ‘বাংলাদেশের জনগণকে একটি নিয়মতান্ত্রিক ও ন্যায়ানুগ সরকার প্রদানের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় অন্য সব কার্য করিতে পারিবেন।’
‘আমরা বাংলাদেশের জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিগণ আরো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিতেছি যে, কোনো কারণে রাষ্ট্রপতি না থাকা বা রাষ্ট্রপতি তাহার কার্যভার প্রয়োগ করিতে অসমর্থ হওয়া বা তাহার ক্ষমতা প্রয়োগ করিতে অসমর্থ হওয়ার ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতির ওপর এতদ্বারা অর্পিত সমুদয় ক্ষমতা, কর্তব্য ও দায়িত্ব উপ-রাষ্ট্রপতির থাকিবে এবং তিনি উহা প্রয়োগ ও পালন করিবেন।’
ঘোষণাপত্রের শেষে বলা হয়, ‘আমরা আরো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিতেছি যে, স্বাধীনতার এই ঘোষণাপত্র ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ তারিখে কার্যকর হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে।’
‘আমরা আরো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিতেছি যে, এই দলিল কার্যকর করার লক্ষ্যে এবং রাষ্ট্রপতি ও উপ-রাষ্ট্রপতির শপথ পরিচালনার জন্য আমরা অধ্যাপক ইউসুফ আলীকে আমাদের যথাযথ ক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রতিনিধি নিয়োগ করিলাম।’
ইতোমধ্যে ১০ এপ্রিল, বাংলাদেশ সময় রাত দশটায় শিলিগুড়ির জঙ্গলে অবস্থিত গোপন বেতার কেন্দ্র থেকে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের সুদীর্ঘ দিকনির্দেশনামূলক ঐতিহাসিক ভাষণটি প্রচারিত হয়। সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনির বর্বরতার বিরুদ্ধে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অকুতোভয় সংগ্রাম এবং বঙ্গবন্ধুকে রাষ্ট্রপতি করে স্বাধীন বাংলাদেশ সরকার গঠনের কথা।