৯ জানুয়ারী ১৯৭২ঃ শেখ মুজিবের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন – লন্ডন থেকে দিল্লী
৮ জানুয়ারি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর জন্য রাখা দুটো বিমান খালি ছিল। যার একটি প্রধানমন্ত্রীর অন্যটি অতিরিক্ত থাকে। সেখান থেকে একটা বিমানে শেখ মুজিবকে দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করেছিলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। পরদিন ৯ জানুয়ারি লন্ডন সময় সকাল ৮টা ৩০ মিনিটে ঢাকায় ফেরার জন্য শেখ মুজিব ওঠেন ব্রিটিশ রাজকীয় বিমানবহরের কমেট জেটে। সেদিন বিমানে ছিলেন বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ গ্রেট ইস্টার্ন ইন্স্যুরন্স কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম মওলা, ড. কামাল হোসেন, ভারতীয় দুইজন কূটনীতিক, বাংলাদেশ কূটনীতিক ফারুক রশিদ চৌধুরীসহ আরও কয়েকজন।
শেখ মুজিবকে বহনকারী বিমান স্থানীয় সময় ৮টা ৩০ মিনিটে বাংলাদেশ সময় ২টা ৩০ মিনিটে লন্ডন থেকে যাত্রা করেছিল। ভারতীয় সময় সন্ধ্যা সাত টায় বিমানটি সাইপ্রাসের এক্রটিরি বিমান ঘাঁটিতে পৌছায়। সেখানে যাত্রা বিরতির সময় ছিল দেড় ঘণ্টা। শেখ মুজিবের ইচ্ছায় এ যাত্রা বিরতি আড়াই ঘণ্টা করা হয়। সাড়ে নয়টায় আবার বিমান ওমানের মাশিরা ব্রিটিশ বিমান ঘাটির উদ্দেশে ছেড়ে যায়। এখানেও রি ফুয়েলিং করা হয়। মাশিরা আসতেই ১০ তারিখের সুচনা হয়। ঘণ্টা খানেক যাত্রা বিরতির পর বিমান দিল্লীর উদ্দেশে রওয়ানা হয়।
সেদিন শেখ মুজিবকে নিয়ে বিমানটা চালিয়েছিলেন স্কোয়াড্রন লিডার মিস্টার কুক। ঢাকা যাবার আগে তিনি বিস্তারিত জেনে নিয়েছিলেন ঢাকা এয়ারপোর্ট সম্বন্ধে। কতটা লম্বা রানওয়ে, সেখানে অবতরণ করতে পারবে কিনা। সবকিছু ঠিকঠাক হলেই তিনি উড়েছিলেন। সম্ভবত এসব কারণেও দিল্লি থেকে ভারতীয় একটা বিমান প্রস্তুত রাখা হয়েছিল। যদি কমেট জেট সেখানে অবতরণ করতে না পারে সেক্ষেত্রে বিকল্প ভারতীয় বিমান।বিমানটা লন্ডন থেকে রওনা হওয়ার ২৩ ঘণ্টা ১১ মিনিট পর শেখ মুজিব ঢাকাতে পৌঁছেছিলেন। যে কোন বিমান পূর্ব দিকে রওয়ানা করলে কাগজে কলমে সময় বেশী লাগে পশ্চিম দিকে গেলে কম লাগে বিষয়টি হল আহ্নিক গতির বিষয় কিন্তু প্রকৃত সময় ঠিক থাকে।