You dont have javascript enabled! Please enable it!

১২ এপ্রিল ১৯৭১ শহীদ ডা. জিকরুল হক
সংসদ সদস্য ডা.জিকরুল হক, রাজনীতিবিদ ও সমাজকর্মী তুলশীরাম আগরওয়ালা, ডা.শামসুল হক, ডা. বদিউজ্জমান, ডা. ইয়াকুব আলী, যমুনা প্রসাদ, কেডিয়া, রামেশ্বর লাল আগরওয়ালাসহ গ্রেফতারকৃত সৈয়দপুরের প্রায় ১৫০ জন স্থানীয় নেতৃবৃন্দকে ১৯ দিন নির্মম অত্যাচার চালিয়ে অবশেষে রংপুর সেনানিবাসের পশ্চিম পার্শ্বের উপ-শহরে নিয়ে গুলি করে হত্যা করে।

শহীদ ডা. জিকরুল হক
শহীদ ডা. জিকরুল হক ১৯১৪ সালের ১ সেপ্টেম্বর রংপুর জেলার সৈয়দপুর শহরে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা মরহুম ডা. শেখ জেয়ারতউল্লাহ আহম্মদ ও মাতা মরহুম চৌধুরানী তৎকালীন সৈয়দপুর শহরে বাঙালি মুসলমান বসতি স্থাপনে অগ্রণী ভূমিকা রাখেন। ডা. জিকরুল হক ছাত্রজীবনে মুসলিম ছাত্র আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন। তিনি সৈয়দপুর উচ্চ ইংরেজি বিদ্যালয় থেকে ম্যাট্রিক পাস করেন। ১৯৩৩ সালে কলকাতা ক্যাম্বেল মেডিকেল স্কুলে পড়ার সময় মরহুম এ কে ফজলুল হক ও মরহুম হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী সাহেবদের সাহচর্যে আসেন এ সময়র তিনি মুসলীম ছাত্র ফেডারেশন কর্মী ছিলেন এবং দেশ বিভাগের পরও তাদের সাথে ঘনিষ্ঠতা বজায় রেখে সক্রিয় রাজনীতিতে অংশগ্রহণ ১৯৪০-১৯৫১, সময়র তিনি মুসলীম লীগ করেন। তিনি থানা পর্যায়ে সম্পাদক, সভাপতি এবং জেলা পর্যায়ে সহ-সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন।
১৯৪৭ সালে ভারত থেকে আগত মোহাজেরদের পুনর্বাসন ব্যবস্থায় সক্রিয় ছিলেন।
১৯৫৪ সালে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে যুক্তফ্রন্টের মনোনীত মোহাজের প্রার্থীকে বিপুল ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেন।আওয়ামী লীগে যোগদান করেন এবং আওয়ামী লীগের এমএলএ হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। ঐ সময় থেকে মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে ঘনিষ্ঠ হন। ১৯৫৪ হতে আমৃত্যু, আওয়ামী লীগ নীলফামারী মহকুমা সম্পাদক এবং আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। ১৯৫৮ সালে সৈয়দপুর পৌরসভার প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে প্রতিটি আন্দোলনে তিনি সক্রিয় ভূমিকা রাখেন। ১৯৭০ সালে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়ে দ্বিতীয়বার প্রাদেশিক এমপি নির্বাচিত হন।
২৫ মার্চ কালরাতেই তাঁকে পাক আর্মিই ধরে নিয়ে যায়। ক্যান্টনমেন্টে সৈয়দপুর শহরের নেতৃবৃন্দের সাথে আটক রেখে ১২ এপ্রিল পর্যন্ত অমানুষিক নির্যাতন চালায়। এক পর্যায়ে তাঁর দুই হাঁটু ভেঙে দিয়েছিল। বারবার তার কাছে জানতে চেয়েছিল, ‘বল, তোমার সাথে শেখ মুজিবের কী কথা হয়েছিল?’ ১২ এপ্রিল সবাইকে রংপুর ক্যান্টনমেন্টের কাছে গুলি করে হত্যা করা হয়।
সবশেষে উল্লিখিত তথ্যগুলো ঘটনাস্থলে গুলিতে আহত, তবু অলৌকিকভাবে বেঁচে যাওয়া দু’ভাই নারায়ণ প্রসাদ (বিএসসি) ও কলেজছাত্র কমলা প্রসাদের (বর্তমান কামাল আহম্মদ) কাছ থেকে জানা যায়।

সূত্র : মুক্তিযুদ্ধে শহীদ চিকিৎসক (জীবন কোষ), মেডিভয়েস, বায়জিদ খুরশীদ রিয়াজ

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!