৬ জানুয়ারী ১৯৭২ঃ নয়াদিল্লীতে সামাদ আজাদ
নয়াদিল্লীতে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুস সামাদ আজাদ ভারতে পৌঁছে রাজঘাটে মহাত্মা গান্ধীর সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাথে সাক্ষাৎ করেছেন। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুস সামাদ আজাদ প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রন জানান। ইন্দিরা গান্ধী সামাদ আজাদের আমন্ত্রন গ্রহন করেছেন। এর পর পরই তিনি এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সচিব ডিপি ধরের সহিত বৈঠক করেন।
নয়াদিল্লীতে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুস সামাদ আজাদ ভারতীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী জগজীবন রামের সহিত ৪০ মিনিট ব্যাপী আলোচনা করেছেন। আলোচনায় দু দেশের মধ্যে প্রতিরক্ষা সহযোগিতার(সামরিক প্রশিক্ষন) বিষয়ে আলোচনা করা হয়। ভারতীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী জগজীবন রাম বলেন বাংলাদেশে ভারতীয় বাহিনী বাংলাদেশীদের মন জয় করা সত্ত্বেও অতি শীঘ্রই তাদের প্রত্যাহার করে নেয়া হবে। তিনি বলেন ভারত বাংলাদেশের সেনাবাহিনীকে প্রশিক্ষন এর সুবিধাদি দিতে রাজী হয়েছে। তিনি বলেন বাংলাদেশ এখন প্রতিষ্ঠিত তাই ভারত ও বাংলাদেশ সমতার ভিত্তিতে কাজ করতে পারে। আলোচনায় ভারতের প্রতিরক্ষা সচিব এবং দিল্লীতে বাংলাদেশ মিশন প্রধান হুমায়ুন রশিদ চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
পরে নয়াদিল্লীতে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুস সামাদ আজাদ ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী সরন সিং সহিত ৬০ মিনিট ব্যাপী আলোচনা করেছেন। বৈঠক শেষে জনৈক বিদেশী সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে সামাদ বলেন এটা নিশ্চিত শেখ মুজিব মুক্তি পাচ্ছেন এবং তিনি দিল্লী হয়ে ঢাকা পৌছবেন। ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী সরন সিং আব্দুস সামাদ আজাদকে মধ্যাহ্ন ভজে আপ্যায়িত করেন। ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী সরন সিং বলেন দু দেশের মধ্যে লিখিত চুক্তির চেয়ে অনেক ভাল সম্পর্ক বিরাজমান।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুস সামাদ আজাদ ভারতের পরিকল্পনা মন্ত্রী সুব্রানিয়াম এর সাথে দেখা করেন জনাব সুব্রানিয়াম বাংলাদেশকে শতভাগ সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুস সামাদ আজাদ বিদ্যুৎ ও সেচ মন্ত্রী কেএল রাও এর সাথে সাক্ষাৎ করে তিনি ভারতের কাছে বাংলাদেশের বন্যা নিয়ন্ত্রন ও সেচ এবং বিদ্যুৎ সেক্টরে সাহায্য কামনা করেন।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুস সামাদ আজাদ ভারতের প্রেসিডেন্ট ভিভি গিরির সাথেও সাক্ষাৎ করেছেন।
সকল সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের প্রেস ব্রিফিং দেন হুমায়ুন রশিদ চৌধুরী। তিনি বলেন আজকের সকল আলোচনার প্রধান বিসয় ছিল বঙ্গবন্ধুর মুক্তির বিষয়ে। বাংলাদেশ সরকার আশা প্রকাশ করেন যে তিনি শীঘ্রই মুক্তি পাবেন।