ত্রাণ সামগ্রি সম্পর্কে প্রেসনােট
গত ২৯ জুন ত্রিপুরা সরকার এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানান- বাংলাদেশের শরণার্থীদের ত্রাণের জন্য বিশ্বের বিভিন্ন সংস্থা সাহায্য পাঠাচ্ছেন। ওষুধপত্র, শুকনাে মাছ, মালটি ভিটামিন ট্যাবলেট ইত্যাদি সাহায্য হিসেবে প্রেরণ করা হচ্ছে। ভারত সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে, পুনর্বাসন অধিকারের কলিকাতাস্থিত শাখা সচিবালয়ের মাধ্যমে এসব দ্রব্য সংগৃহীত হবে এবং বিভিন্ন রাজ্যের চাহিদা অনুযায়ী এগুলাে বন্টন করা হবে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা এই পদ্ধতিটি সমর্থন করেছেন। ত্রিপুরা সরকার যেসব জিনিসপত্র সাহায্য হিসেবে পাবেন সেগুলােও ত্রিপুরা সরকারের ত্রাণ অধিকারের মাধ্যমে সংগৃহীত ও বণ্টন করা হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অতএব ত্রাণ বিভাগের মধ্যস্থতা ছাড়া সরাসরি কোনাে সংস্থার কাছে সাহায্য প্রেরণের প্রস্তাব না করার জন্য সমস্ত সরকারি কর্তৃপক্ষকে অনুরােধ করা হয়েছে। প্রয়ােজনীয় জিনিসপত্রের জন্য শরণার্থী ত্রাণ অধিকারে যােগাযােগ করতে হবে এবং উক্ত অধিকার থেকে ত্রাণ সামগ্রী বিলি করা হবে।’
আজ সপ্তাহকাল অতিবাহিত হওয়ার পরেও দেখা যায় যে, ত্রিপুরা সরকারের ত্রাণ অধিকার ত্রিপুরার শরণার্থীদের জন্য অদ্য পর্যন্ত কী কী দ্রব্যসম্ভার কতত পরিমাণ পেয়েছে এবং ঐ দ্রব্যসামগ্রী কীভাবে, কোথায় এবং কাদের দ্বারা বিলিবণ্টন হয়েছে বা হচ্ছে, সে সম্পর্কে কোনাে প্রকার প্রেস বিজ্ঞপ্তি বা প্রেস রিলিজ আকারে সংবাদ প্রচারার্থে দেওয়া হয়নি। বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী শরণার্থী সম্পর্কে যে বিবৃতি প্রদান করেন, তাতে আনন্দ-আহ্লাদে গদগদ ভাষায় বলা হয়েছে, প্রায় প্রতিদিনেই এখন ওষুধপত্র, তাবু, ঘরের ছাউনি গুড়া দুধ প্রভৃতি প্রচুর পরিমাণে আকাশপথে চালান আসছে। ঐ বিবৃতির তের দিন পর গত ৩ জুলাই মুখ্যমন্ত্রী বনমহােৎসবে ভাষণ দিতে গিয়ে আক্ষেপ করে বলেছেন, আমরা শরণার্থী শিবির নির্মাণের জন্য পলিথিন, টিন ও তার সরবরাহের আশ্বাস পেয়েছিলাম। কার্যত কিছুই পাওয়া যায়নি। প্রথম কথা প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণে আসছে, দ্বিতীয় বক্তব্য হলাে কিছুই পাওয়া যায়নি। পরস্পর বিরােধী উক্তি। মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং এই বিরােধের মীমাংসা (অর্থাৎ দুই বক্তব্যের মধ্যে সমন্বয় সাধন) না করলে আমাদের সাধ্যসাধনায় তা কুলাবে না।
সূত্র: ত্রিপুরা
৭ জুলাই, ১৯৭১
২২ আষাঢ়, ১৩৭৮