গােদাগাড়ি পুকুরের আক্রমণ
ঠাকুরগাঁও জেলার অন্তর্গত পীরগঞ্জ থানার গােদাগাড়ি এলাকায় একটি পুকুর ছিল। পাকিস্তানি সৈন্যদের ক্যাম্প স্থাপনের ফলে পুকুরটি অধিক পরিচিতি লাভ করে। শত্রু গােদাগাড়ি পুকুরের দক্ষিণ পাশে বাংকার করে স্থায়ী ক্যাম্প করেছিল। উদ্দেশ্য, মুক্তিবাহিনীর যে-কোনাে তৎপরতাকে স্তব্ধ করে দেওয়া। সে উদ্দেশ্যে পুকুর পাড়ে তাদের শক্ত অবস্থান। ১৯৭১ সালের নভেম্বর মাসে ইপিআর ও মুক্তিবাহিনীর সমন্বয়ে গােদাগাড়ি পুকুরের যুদ্ধ সংঘটিত হয়। এ যুদ্ধে সুবেদার মাে. সফিউল্লাহ ও হাবিলদার মাে, আনিছসহ ৯ নম্বর উইংয়ের প্রায় ১০-১২জন ইপিআর সৈনিক, মুক্তিবাহিনীর ৫টি গ্রুপের প্রায় ২০জনের সমন্বয়ে গঠিত ১টি দল ভারতের অপারেশন ক্যাম্প থেকে ফকিরগঞ্জ বিওপি’র পাশ দিয়ে বাংলাদেশের গােদাগাড়ি ক্যাম্প আক্রমণ করে। ক্যাম্পের পূর্ব পাশ দিয়ে পুকুরের উত্তর পাশে মুক্তিবাহিনী অবস্থান নেয়। এবং নির্দিষ্ট সময়ে সংকেত পাওয়ামাত্র রাত আনুমানিক ১১টায় একই সাথে ফায়ার আরম্ভ করে। মুক্তিবাহিনী কর্তৃক হঠাৎ ফায়ার আরম্ভ করার সাথে সাথেই শত্রু পালটা ফায়ার আরম্ভ করে, কিন্তু মুক্তিবাহিনীর ফায়ারের কাছে তারা ধরাশায়ী হয়ে পড়ে। শক্রর অধিনায়ক ছিল মেজর জাহিদ এবং মুক্তিবাহিনীর অধিনায়ক ক্যাপটেন ইদ্রিস, ক্যাপটেন শাহরিয়ার, মেজর নাজমুল হুদা, ক্যাপটেন জাহাঙ্গীর প্রমুখ। রাত ১১টা থেকে পরদিন বিকাল ৪টা পর্যন্ত বাংকার আক্রমণে অধিকাংশ পাকিস্তানি সৈন্য মারা যায়। নিহতের সংখ্যা ২৭। ২টি অস্ত্র মুক্তিযােদ্ধাদের হস্ত গত হয়।
সূত্র : মুক্তিযুদ্ধে সামরিক অভিযান – পঞ্চম খন্ড