নিউজ উইক- ১২ই জুলাই, ১৯৭১
পাকিস্তান
গত সপ্তাহেই প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে যে এই প্রতিবন্ধীতাকে হালকা ভাবে নেওয়ার অবকাশ নেই। এটা সত্য যে পূর্ব পাকিস্তানে পশ্চিম পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণ থাকা সত্ত্বেও বিদ্রোহ দমন হতে তা এখনও অনেক দূরেই আছে। সাম্প্রতিক সময়ে এক সময়কার অসংগঠিত মুক্তিফৌজের মুক্তিযোদ্ধারা গেরিলা যুদ্ধে তাৎপর্যপূর্ণ উন্নতি প্রদর্শন করেছে। গুরুত্বপূর্ণ রেললাইন ও মহাসড়ক কেটে দিয়ে তারা ডজনের উপর ব্রীজ উড়িয়ে দিয়েছে, তারা বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র ধ্বংস করেছে এবং স্থানীয় সরকার প্রচলনে সেনাবাহিনী দ্বারা নিযুক্ত অবাঙালী সদস্যদের তারা গোপনে হত্যা করেছে। ইয়াহিয়ার সেনাবাহিনীতে স্নায়ু উত্তেজনা বাড়ছে এবং পূর্বাঞ্চলে চার ডিভিশনের সেনাবাহিনীকে শক্তিশালী করতে আরও দুই ডিভিশন সৈন্য পাঠাতে অনুরোধ করা হয়েছে। গত সপ্তাহে পূর্ব বঙ্গের রাজধানী ঢাকাতে নিউজ উইকের লরেন্স জেনকিন্সকে একজন বিদেশী রাষ্ট্রদূত বলেছেন যে, “এইভাবেই ভিয়েতনামে শুরু হয়েছিল।” সেনাবাহিনী যতদিন ইচ্ছে এর মূল্য দিতে এখানে অবস্থান করতে পারে। কিন্তু সরকার গেরিলা যুদ্ধকে দীর্ঘায়িত করার মতো অবস্থায় নেই।
একই রকম উপসংহারে পৌঁছে গত সপ্তাহে এগারটি দেশের সমন্বয়ে ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের একটি দল পাকিস্তানের সাহায্যার্থে ৫০০ মিলিয়ন ডলারের সরবরাহ নিয়ে পাকিস্তানের পৌঁছেছে। দলটি বিধ্বস্ত পূর্বাঞ্চল পরিদর্শনের পর ইয়াহিয়াকে এই শত্রুতার রাজনৈতিক সমাধান খুঁজতে বাধ্য করার জন্য এই সহায়তাকে ফিরিয়ে নিতে সুপারিশ করে। একমাত্র যুক্তরাষ্ট্রই এর বিরোধীতা করে যা ঘোষণা করে যে নিজের প্রভাব ইয়াহিয়ার উপর জারি রাখতে ইসলামাবাদের প্রতি তার সহায়তা অবিরত রাখবে এবং সম্ভবত শান্তির পথে নিয়ে যেতে তাকে উদ্বুদ্ধ করবে। অবশ্য এই ধরণের ভ্রান্ত চিন্তাভাবনা সংঘাতের মধ্যস্থতা করার জন্য কোন প্রকার প্রবৃত্তি প্রদর্শন করেনি। প্রকৃতপক্ষে এটাই সত্য যা ঢাকাস্থ এক কূটনৈতিক গত সপ্তাহেই পূনর্মিলনের কোন সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়ে দিয়েছেন। “ যেদিন থেকে পূর্বাঞ্চলে সেনাবাহিনী প্রবেশ করেছে সেদিনই পাকিস্তানের মৃত্যু হয়েছে।”