৪ এপ্রিল ১৯৭১ প্রবাসে বাংলাদেশ আন্দোলন
এদিন (রবিবার) দুপুর বেলা বাঙালী ছাত্রদের উদ্যোগে লণ্ডনে হাইড পার্কে একটি জনসমাবেশ এবং বিকেল বেলা ট্রাফালগার স্কোয়ারে একটি বিরাট জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। ট্রাফালগার স্কোয়ারে প্রায় দশ হাজার লোকের এ জনসভায় অন্যান্যদের মধ্যে কাউন্সিল ফর দি পিপলস রিপাবলিক অব বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কমিটির জেনারেল সেক্রটারী শেখ আবদুল মান্নান, সুলতান শরীফ, আবদুল মতিন (ম্যাঞ্চেষ্টার ) সাখাওয়াত হোসেন ও মোহাম্মদ হোসেন মঞ্জু বক্তৃতা করেন। গাউস খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সভায় কার্য পরিচালনা করেন বি এইচ তালুকদার।
এদিন সন্ধাবেলা হ্যাম্পষ্টেড টাউনে হলে শ্রমিক দলের প্রভাবশালী সদস্য জন এনালস এর সভাপতিত্বে এক জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। পূর্ববংগে পাকিস্তানী সৈন্যবাহিনীর আক্রমণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জ্ঞাপনের জন্য আহূত এই সভায় বক্তৃতাদান কারীদের মধ্যে লর্ড ব্রকওয়ে, শ্রমিক দলীয় পার্লামেন্ট সদস্য মাইকেল বার্নস, শেখ আবদুল মান্নান, মিসেস বিলকিস বানু, লণ্ডন আওয়ামী লীগের জেনারেল সেক্রেটারী সুলতান শরীফ ও ‘বাংলাদেশ নিউজলেটার’- র সম্পাদক ফরিদ জাফরীর নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। লর্ড ব্রকওয়ে পূর্ব বাংলার ব্যাপারে জাতি সংঘের হস্তক্ষেপ দাবী করেন এবং পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীকে কোন প্রকার সাহায্য না দেওয়ার জন্য শ্রীলংকার প্রতি আবেদন জানান। পিটার শোর পূর্ব বাংলার হত্যাকাণ্ডকে পাকিস্তানের অভ্যন্তরীন ব্যাপার বলে মেনে নিতে অস্বীকার করেন এবং পূর্ব বাংলার জাতি সংঘের পর্যবেক্ষণ দল পাঠাবার জন্য ব্রিটিশ সরকার কর্তৃক পদক্ষেপ গ্রহনের দাবী জানান। মাইকেল বার্নস শরনার্থীদের সাহায্য দানের ব্যাপারে আলোচনা করে সময় অপচয় করার আগেই পূর্ববংগ সমস্যার রাজনৈতিক সমাধান করা বাঞ্ছনীয় বলে মন্তব্য করেন। ফরিদ জাফরী ও তারিক আলী পূর্ব বাংলার স্বাধীনতা আন্দলোনকে আওয়ামী লীগের ভূমিকা বিশ্লেষণ করে বলেন, বাংলাদেশ সম্পূর্ণ স্বাধীন না হওয়া পর্যন্ত বাঙালীরা শেষ রক্তবিন্দু দিয়েও সংগ্রাম চালিয়ে যাবে।