You dont have javascript enabled! Please enable it!

৪ জানুয়ারী ১৯৭২ঃ ছাত্রলীগের ২৪ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী

ঘোষিত কর্মসূচী অনুযায়ী সকাল সাড়ে ৬ টায় জহুরুল হক হলে জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে কর্মসূচী শুরু হয়। দলের সাধারন সম্পাদক শাহজাহান সিরাজ পতাকা উত্তোলন করেন। সকাল ৮ টায় সেখান থেকে মিছিল করে শহীদ মিনারে পুস্পস্তবক অর্পণ করা হয়। সেখানে ৪ ছাত্রনেতা ও তোফায়েল আহমেদ এমএনএ পুস্পস্তবক অর্পণ করেন। সেখানে ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক শাজাহান সিরাজ সংক্ষিপ্ত বক্তব্য প্রদান করেন। শহীদমিনারে ছাত্র নেতৃবৃন্দ সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতি ভিত্তিক শোষণহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য শপথ বদ্ধ হন। ছাত্রলীগ সভাপতি নুরে আলম সিদ্দিকি শপথ পরিচালনা করেন। শপথ নামা ছিল নিম্নরুপ আজ বাংলার কৃষক শ্রমিক মেহনতি মানুষের আশীর্বাদ পুষ্ট বিপ্লবী ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ২৪ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে রক্তস্নাত শহীদমিনারের পাদদেশে দাঁড়াইয়া আমরা শপথ গ্রহন করিতেছি যে, ১৯৫২ সন হইতে শুরু করিয়া ৬২ ৬৬ ৬৯ এর গন সংগ্রাম ও ৭১ সালের মহান স্বাধীনতা আন্দোলনে যাহারা আত্মাহুতি দিয়াছেন তাহাদের আত্মত্যাগ ও মহান দেশপ্রেমকে সামনে রাখিয়া শোষণহীন সমাজতান্ত্রিক সমাজবাদের সংগ্রাম চালাইয়া যাইব এবং মুজিববাদ প্রতিষ্ঠিত করিব। আমরা গনতন্ত্রের স্থায়িত্ব বহাল করিব। ধর্ম নিরপেক্ষতাবাদ পূর্বের মত ভবিষ্যতেও অক্ষুন্ন রাখিব। স্বাধীনতা ঘরে ঘরে পৌঁছাইয়া দেয়ার জন্য গঠনমূলক শক্তি হিসাবে আমরা আত্মনিয়োগ করিব। আজ আমাদের সংগ্রাম শোষণ, পুঁজিবাদ, সামন্তবাদ, সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে। আমাদের বিপ্লব নিরক্ষরতার বিরুদ্ধে অব্যাহত গতিতে আগাইয়া চলিবে আমরা ধ্বংসস্তূপের মাঝে দাঁড়াইয়া আমাদের সোনারবাংলা গড়িয়া তুলিব।

ছাত্রলীগ সভাপতি নুরুল আলম সিদ্দিকির সভাপতিত্তে বিকেলে ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউটে আলোচনা সভা আয়োজন করা হয়। বক্তব্য প্রদান করেন অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রী তাজ উদ্দিন আহমেদ, স্বাস্থ্য মন্ত্রী জহুর আহমেদ, যোগাযোগ মন্ত্রী শেখ আজিজ, সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা ও রাষ্ট্রদূত কমরুদ্দিন আহমেদ, বিজ্ঞানী কুদরত ই খোদা, সাবেক ছাত্রলীগ সভাপতি শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন, ডাকসু ভিপি আসম রব, ডাকসু জিএস আব্দুল কুদ্দুস মাখন, তোফায়েল আহমেদ, খালেদ মোহাম্মদ আলী এমএনএ, এম এ ওয়াদুদ, সাবেক সভাপতি —, সাবেক সাধারন সম্পাদক আব্দুল আওয়াল।
সভায় সদ্য পাক কারাগার থেকে মুক্ত চিন্তাবিদ কমর উদ্দিন বলেন পাক সেনাবাহিনীর জিজ্ঞাসাবাদের পদ্ধতি ছিল চরম নিষ্ঠুর। জিজ্ঞাসাবাদের সময় বহু বাঙ্গালীকে পিটিয়ে মারা হয়েছে। অনেক মেয়েদের ধরে নিয়ে তাদের চুল কেটে নেয়া হয়েছে তাদের অর্ধ নগ্ন করে রাখা হত। তাদের উপর পাশবিক নির্যাতন চালানো হয়েছে। বাংলার ছেলেরা প্রান দিয়ে স্বাধীনতা না আনলে আমরা আর মুক্ত হতাম না।

 

 

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!