২৯ মার্চ ১৯৭১ পাবনা
২৯ মার্চ পাবনা সদর উপজেলার মালিগাছায় (পাবনা-ঈশ্বরদী মহাসড়ক সংলগ্ন) পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর সঙ্গে মুক্তিকামী যোদ্ধাদের এক রক্তক্ষয়ী সম্মুখ যুদ্ধ সংগঠিত হয়। রক্তক্ষয়ী এ যুদ্ধে আটঘরিয়া থানা পুলিশের এসআই আব্দুল জলিলসহ বেশ ক’জন মুক্তিকামী যোদ্ধা শহীদ হন। এ যুদ্ধে ২ জন পাকিস্তানী সেনাও নিহত হয়। ২৫শে মার্চ রাত্রিতে রাজশাহী ক্যান্টমেন্ট থেকে পাবনা জেলা সদরে আগত ১ কোম্পানি প্রায় ১৫০ জন পাক সেনার প্রায় সবাই একে একে নিহত হয়। ২৫তম পাঞ্জাবের এক কোম্পানির মেজর আসলাম ও ক্যাপ্টেন ইশফাক লে রশিদসহ ৪০ জন পাকিস্তানি সৈন্য পাবনা থেকে পলায়নের পথে গোপালপুরের কাছে নিহত হয়। জীবিতদের অনেকে বিচ্ছিন্নভাবে রাজশাহীর দিকে যাওয়ার পথে প্রাণ হারায়। ২৯ মার্চ মুলাডুলির পার্শ্ববর্তী লাটোর জেলার লালপুর উপজেলার ময়না গ্রামে সেখানকার নিহত দু’জন পাকসেনাকে দাশুড়িয়া-নাটোর রোডের একটি স্থানে গাছের ডালে বেশ কয়েকদিন ঝুলিয়ে রাখে বিক্ষুব্ধ জনতা। পাবনার স্বাধীনতাযুদ্ধের ঊষালগ্নে পাবনাবাসীর এই বিরোচিত ও স্বতঃস্ফুর্ত অংশগ্রহণ ও আত্মত্যাগ মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে চিরদিন উজ্জ্বল হয়ে থাকবে।
বিমান বন্দরের নিরাপত্তা রক্ষায় নিয়োজিত পাক এয়ারফোর্সের ৯ সদস্যকে পাবনা জেলা প্রশাসক নূরুল কাদের খান ও জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ আজিম উদ্দিনের নেতৃত্বে প্রায় ১০ হাজার লোক ঘেরাও করে আত্মসমর্পনে বাধ্য করে। গ্রেফতারকৃতদেরকে ঈশ্বরদী থানায় এনে আটকে রাখা হলেও পরে অবস্থা বেগতিক দেখে আমিনুল ইসলাম চুনু ও নূরুজ্জামান বিশ্বাসের নেতৃত্বে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা কয়েকদিন পর সেখান থেকে বের করে পাকশী হার্ডিঞ্জ ব্রিজের কাছে নিয়ে গিয়ে হত্যা করে এবং লাশ পদ্মা নদীতে ভাসিয়ে দেয়