You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.12.25 | নতুন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দানের জন্য সব দেশের প্রতি আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমদ - সংগ্রামের নোটবুক

২৫ ডিসেম্বর ১৯৭১ঃ প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমদ

প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমদ সাবেক গভর্নর হাউজে দেশী বিদেশী সাংবাদিকদের সঙ্গে আলোচনাকালে বলেন, বাংলাদেশ সবার সঙ্গে শান্তিপূর্ণ অবস্থান চায়। তিনি নতুন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দানের জন্য সব দেশের প্রতি আহ্বান জানান। চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে কী সম্পর্ক হবে এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন বাংলাদেশের প্রশ্নে চীনের দৃর্ষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করার ব্যাপারে নেতৃবৃন্দের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে চীনের জনগণের প্রতি আবেদন জানান। এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী আশ্বাস দেন যে, শীঘ্রই দেশকে শাসনতন্ত্র দেওয়া হবে এবং ভবিষ্যতে শাসনতন্ত্রে অবশ্যই জনগনের আকাক্ষার প্রতিফলন ঘটতে হবে। তিনি বলেন, ভবিষ্যতে শাসনতন্ত্র প্রনীত না হওয়া পর্যন্ত যেসব পুরাতন আইন দেশের স্বার্থবিরোধী নয় তা বলবত থাকবে। তিনি বলেন, জাতির সামনে প্রধান দায়িত্ব হচ্ছে, দেশের বিপর্যস্ত অর্থনীতির পুনর্গঠন এবং ভারতে আশ্রয় নেয়া বাংলাদেশের শরণার্থীদের পূনর্বাসন। বাংলাদেশে অন্তর্বতীকালীন জাতীয় সরকার গঠনের জন্য ন্যাপ প্রধান যে প্রস্তাব দিয়েছেন সে সম্পর্কে তিনি বলেন, জাতীয় সরকার সব সময় নির্বাচিত প্রতিনিধিদের নিয়ে গঠিত হয়। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিগত বছরের নির্বাচন বিশ্বের কাছে এক নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে এবং সরকার গঠনের জন্য আওয়ামী লীগকে রায় দিয়েছে। তিনি বলেন, জাতি-ধর্ম- নির্বিশেষে জনসাধারণ শুধু আওয়ামী লীগের ৬-দফা কর্মসূচির প্রতিই ভোট দেয়নি এবং ধর্মনিরপেক্ষতা ও গণতন্ত্রের প্রতিও ভোট দিয়েছে।

মুক্তিবাহিনীকে নিরস্রি করণ সম্পর্কে তাজউদ্দিন আহমদ বলেন, যাঁরা দখলদার বাহিনীর হাত হতে দেশের মুক্তির জন্য অস্ত্র ধারণ করেছে তাঁরা সাধারণ লোক না বরং তাঁরা অসাধারণ লোক। তাঁরা জানে কখন অস্ত্রধারণ করতে হয় এবং কখন গঠনমূলক কাজে আত্মনিয়োগ করতে হয়। তিনি বলেন যে, তাঁদেরকে জাতীয় মিলিশিয়া এবং অন্যাণ্য জাতিগঠনমূলক কাজে নিয়োগ করা হবে। স্বাধীনতার পূর্বে বিভিন্ন দলের সমবায়ে গঠিত পরামর্শ কমিটির কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই কমিটি বহাল থাকবে। বাংলাদেশ মন্ত্রীসভা ও কমিটির সাধারণ মতের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির কোন কারণ থাকতে পারে না।
এদিন ২৩ তারিখে ধারনকৃত একটি খোলামেলা সাক্ষাৎকার পৃথিবীর বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচারিত হয়। সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য একটি ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হবে। শেখ মুজিবের মুক্তির ব্যাপারে তিনি বলেন বিশ্ব জনমতের চাপেই পাকিস্তান সরকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে মুক্তি দিতে বাধ্য হবে। এ সাক্ষাৎকারের সময় সৈয়দ নজরুল ইসলাম পাশেই ছিলেন।